Posts

Showing posts from April, 2019

বিলম্ব

হে জীবন বিলম্বে জড়ালে৷ ঠিকানা হারানো স্রোত অন্ধকারে ঠেলে ক্লান্তির প্রলাপ, মৃত প্রায় বধ্যভূমির কিনারে হে জীবন বিলম্বে জড়ালে৷ কত খুন, ক্ষতে খুন, গ্লানি.. ভেতরে মরার আগে নিজেকে চিনিনি৷ প্রসারিত নৈবদ্যের থালা সাজানো পৃথার রূপে এলে৷ কর্ম শেষে, স্নান শেষে আরামের ডালে.. হে জীবন মুকুল ফোটালে৷ তোমায় সন্দেহ হয়.. ভয়.. সূর্যকে পোড়াও যদি প্রণয়ের কোলে! সকল দ্বন্দের অবরোহনের কালে ধন্য হব হে জীবন বিলম্বে জড়ালে৷                ✍ প্রভাত ঘোষ⚡

নীলকণ্ঠ

ছিল না ওপরে কিছু, কিছুই ছিল না বাঁধা চোখে ভালবাসা ছাড়া৷ গরমে ঘামের দাগে ছাই.. ঘৃণার চৌকাঠে কোনো দূরত্ব ছিল না৷ পিঠে পিঠে এতকিছু.. বোধের সীমানা পেরিয়ে আসার আগে সীমানা ছিল না৷ কাটা পথ, পথে কাঁটা শেষে প্রতিটি ভূমির রং স্বাভাবিক হয়৷ দু-ফোঁটা বৃষ্টির পরই কালশিটে ক্ষয়৷ আর মৃত্যু নয়৷ জীবন আবার ওঠে শবের ওপরে৷ দ্বেষ নয়, ছেদ নয় ঘৃণাই সমূহ পরাজয়৷ গরল ছিটিয়ে দিলে নীলকণ্ঠ গাছ হয়ে ওঠে৷                      ✍ প্রভাত ঘোষ⚡

বিরহ পেরিয়ে এলে

নৈঃশব্দের বৃষ্টি থেকে ঘুঙুর ঝঙ্কার৷ সন্ধ্যার নির্জন পথ অতীতের খাতা খুলে কী যেন মোছার চেষ্টায়৷ পশ্চিমি তুষারে ঢাকা ট্র্যাডিশন ছেড়ে জানালা এপার থেকে রবীন্দ্রে ডুবেছে... উল্লাসের খ্যাতিহীন ঢেউ৷ নিজেকে চেনার পরে পথ তার ঠিকানা পাল্টায়৷ কী খোঁজে দিয়েছ দৌড় চঞ্চল হাওয়ায়? সময় বিব্রত হলে নিজেরই তো দায়৷  যা কিছু বিশ্বের যশ গেঁথে আছে ভেতরে কোথাও৷ ওঠাও, ওঠাও স্তর, অন্তলীন গোপন প্রত্যয়৷ বিরহের জানালা পেরোলে ক্ষতদের বড় ক্ষতি হয়৷                        ✍প্রভাত ঘোষ⚡

পিপাসায় জল শেষ হলে

আকাশ হলুদ, আজ প্রত্যয় ফিরেছে নিঃস্বতার চৌকাঠ পেরিয়ে নতুন আলোর ঘ্রাণে ছুটেছে হৃদয়৷ সে আজ আমারও নয়৷ সময়ের জানালায় পরোয়ানা জারি পরিত্যক্ত বসে আছে বিষাদ প্রহরী... মৃত্যুকে বধির করে হে জল্লাদ দিয়েছ গরাদ আকাঙ্খা বাতাস থেকে দূর নির্বাসনে তৃষ্ণাকে হতাশ দেখি জলধীর ভিড়ে৷ বহু রাত্রি ঝড়ের আঘাতে প্রলয়ের বিষণ্ণতা, চাবুকের শেষে নিষ্ফলা জমির আল-এ শিশিরে বাতাস৷ হৈমন্তী আলোয় যেন স্বর্গদ্বার দেখি৷ আবেগের কাছাকাছি এসে কখন সংকেত যেন হঠাৎ উধাউ... অধ্যায় শুরুর আগে পেছনের পৃষ্ঠা খুলে যায়৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ⚡

রাত (১)

ঘুমের আগে শ্মশান ডাকে, সাজো বুকের কোণে আয়না বেঁধে রাখা। ফ্যানের ব্লেডে কাঁদন গীতি, শুনে রাতের মেঘও নীরব স্রোতে ভাসে। চাঁদের কোণে কান্না, ঢোকে ঘরে জানলা বোঝে দূরত্ব কী দীন! নিঃসঙ্গতা জড়িয়ে ফেলে পাছে কাঁচ ভেঙেছে, শব্দ ঢাকে মুখ৷ অনন্ত কী! স্রোতের পাশে মাঠ শীতল দেহ ঘামের খোঁজে যায় কাপড় শেষে নগ্নতাকে ঢেকে গ্রহণ খোঁজে আজন্ম বন্ধ্যায়৷ শরীরে নেই আঁচড়! আছে বুক.. কারও সকাল রাতের অপেক্ষায়৷           

বসন্তের চিঠি

বিষণ্ণ নগর পথে বসন্তের ঘ্রাণে তরলীকরণ হওয়া ক্ষতের স্বভাব। বাসনা প্রাসাদ থেকে দূরে.. অন্ধকার চুমু খেলে বিরহে আদর করি তাকে৷ ইশারার পত্রের সারিতে স্মৃতি ভ্রম, অচেনা সংকেত.. প্রতিটি চিঠিতে না কী লেখা থাকে প্রেরকের নাম! সামান্য চিনেছি যাকে, তারই ঘর পেরিয়ে এলাম৷ লহরী দৃষ্টিতে এক বিনম্র প্রলয় পিপাসার রূপে এসো, বাধ্যতায় নয়৷ ছাইয়ের প্রলেপ মুছে স্মৃতির কোণায়... ভালবাসা বুকে এলে অভিমান ছুঁড়ে ফেলা যায়৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ⚡

প্রজাপতি পুড়ে গেলে

সময় পালিত, ওই ঘোড়াটির ক্ষুর দু পলক দূরে বাধ্যতায় শুঁকে গেছে, নাড়াতে আসেনি৷ যে ফুল ছুয়েছি, বেশ  উড়ে গেছে পরসখ্যতায়৷ বোঝেনি চাষের জমি  যে কর্ষণ করেছে তোমাকে... মালিকানাহীন এক ভৃত্যের পর্যায়৷ নিজের শ্রেণীকে প্রিয় প্রেমগুচ্ছ চেনাবে তোমায়৷ ভালবেসে প্রত্যহই ডাকে সে আমার ভালবাসা নয়৷ ক্ষমা কোরো হে ক্ষয়িষ্ণু প্রেম, বিভেদ ক্ষতেরা আজ পরকিয়াগামী৷ মৃত্যু এক নিখাদ প্রেমিকা৷                    বহুকাল অপেক্ষায় ব্রতী৷

তালগাছ

দু-বিঘা জমির মাঝে দৃঢ়, পূর্ণ চেতনায়.. দীর্ঘাকার বীরের ছাতিতে.. নিজেকে দমন করে ওড়াটাও স্থগিত এখন৷ গোল গোল পাতা থেকে পৌরুষের ঘ্রাণ৷ নারীত্ব আসেনি বলে নমনের গৌরবও বোঝেনা৷ শতাব্দির সহস্র হুঙ্কার, বজ্রদগ্ধ শরীরের ক্ষত নিষ্প্রাণ পাতার বুকে সাক্ষরিত, ঝরে গেছে নিচে৷ মাটিকে আপন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা সুঠাম কঠিন দেহে আঁকা৷ প্রত্যয়ে, স্ব-পূর্ণ হলে প্রেম তার খবর রাখেনা৷ আজও তালগাছ একা বিনম্র দাঁড়িয়ে প্রতিটি সংসারে দেখা পিতাটির প্রতিচ্ছবি যেন৷

ডাহুক

গভীর শ্বাসের টানে উড়তে উড়তে নিঃস্ব হচ্ছে মেঘ৷ অদৃশ্য ঠোকর থেকে ছিটকে আসা স্ফুলিঙ্গের তাপে... রিক্ততা বেড়েছে যত, পূর্ণ তত করেছে আমায়৷ মোহ নাই, দিশা নাই, শুধু প্রেম তৃপ্তির সহায়৷ ত্যাগ করে গেছে যারা, ফিরবে সেই আকাঙ্খাও ক্ষীণ৷ হয়তো পাখিটির মতো বাসা বেঁধে নির্জনের ডালে নিশ্চুপ তৃষ্ণার দেশে অপেক্ষায় প্রিয় উদ্দালক৷ নিজেকে উজাড় করে উষ্ণতা ছোঁয়ালে... অন্ধকার গাঢ় হলে সে আমায় চুপিচুপি ডাকে৷

চেতনা

ফেরার সময় শেষ হয়নি এখনো৷ এভাবেই ভিজতে বেশ ভাল লাগে নিভৃত গলিতে৷ ছাতা তো কবেই হারিয়েছে, ইচ্ছে করেই আর নতুন কিনি না৷ হারানোয় এত সুখ তাও কি বুঝেছি? উন্মাদের প্রলাপের মতো ঊনবিংশ শতাব্দীর থিওরির ব্রজবুলি গেঁথে ছিল শলাকার মতো৷ জড়িয়ে ধরার চেষ্টা... মাধবীলতার কাছে শেখা৷ শুধু তার গন্ধটুকু অতীত পিয়াসী৷ নিষ্ফলা জমির বুকে হাহাকার যেভাবে ঘুমায়, সেই সুরে আজান ডেকেছে৷ ফোঁটা ফোঁটা সঞ্চয়ের ঘামে উদয়ের অামূল প্রয়াস... হেরে যেতে শেখেনি কখনো, অথচ হারিয়ে যাওয়া বিজয়ের চেয়ে কম নয়৷ উন্মুক্ত পায়ের ছাপ মাটিতে না দিলে কোনোদিন বিষাদ মোছে না৷ তার পর ফোঁটা ফোঁটা নেমে আসে ধারা, প্রান্তিক স্টেশনে কোনো য'ফলার মতো৷ প্রেম যাকে লিখে রাখে অঙ্গীকার রূপে৷

যাত্রাপথ

স্পর্শে নিঃস্ব করো পাশাপাশি সীমানা পেরিয়ে৷ বহুদূর একই ভাবে উদার যাত্রায় আমাকে উদাস করে উদাসীন দেখেও দেখে না৷ সবুজের ছত্রছায়া জানালা পেরিয়ে দুজনার চেয়ে থাকা সন্যাসের পূণ্যস্নান ভেবে৷ গোধূলি এখন থেকে ক্ষণিকের পথ৷ মাঝে মাঝে ছুঁয়ে দাও শরতের বৃষ্টিফোঁটা যেন।                      ✍ প্রভাত ঘোষ ⚡

অনুসরণ

হয়তো আরও কিছুক্ষণ বাকি সামর্থ্য বহন করে নিঃস্বার দরবারে গুপ্তলিপি পুড়ে গেছে কবে... কালের প্রলেপ ঝেড়ে বসাও যাচ্ছে না৷ ক্ষেত্রফলে যতটুকু মাপ ততটা উন্মুক্ত৷ নির্মাণের স্বাভাবিক ছাপে নিজেকে স্থাপন করে বুঝি অনুসরণেই বেশ সুখ                           এতটুকু ধূলাও লাগেনা৷                   ✍ প্রভাত ঘোষ ⚡

হিসেব

হিসেব বদল হয় যেভাবে প্রকৃতি ক্লান্ত হলে ধ্বংস করে সমস্ত বন্ধন উন্মাদ বিরল নয়, প্রতিটি ধ্বজায় তার নাম নির্বাসনে পড়ে থাকে সহস্র প্রণাম৷ মাথাটি ডুবিয়ে ফেলি ভারে অথচ ভাসিয়ে রাখা বিজয়ী কৌশল৷ সময়ের স্তুপ থেকে খসে আবর্জনা ঋতুহীন ঘুর্ণনের পথে৷ উচ্ছিষ্টের দ্বারে এসে                 নত হওয়া ঘড়ির স্বভাব৷             ✍ প্রভাত ঘোষ ⚡