Posts

Showing posts from July, 2019

ঋণ

অসময়ি বৃষ্টি ফোঁটা বইয়ের পাতায় শুন্যতায় লুপ্ত অভিমানী জাগাও, জাগাও তাকে মৃতগঙ্গা পাড়ে কলুষে আগুন জ্বালো ঘুমপাড়ানির৷ কোকিলের আত্মা উড়ে বিনয়ে বিলীন.. কর্কশের মূল্য ধার্য করি৷ হে বাতাস ঋণী রেখো, দয়িতার বেশে সুদ নিতে এসো প্রতিদিন৷ শিশির ও কুয়াশার মাঝামাঝি এসে শিথিল রোদের ঢেউয়ে স্নান৷ সেসব ঋণের শোধ সবুজ পুড়িয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সূর্য অগ্নিকুণ্ড নিয়ে ফেরো ঘর৷ পাখিদের ডানা পুড়ে নিভে আসে রবীন্দ্রপ্রহর৷ কোন দিক, কতদিন... পথ ভুলে গেছে আষাড়-শ্রাবণ দালান ও রাজপথে যন্ত্রাংশের খুলি কোন মন্ত্রে বেঁচে যাবে অর্ধমৃত প্রজাপতিগুলি?

নির্বীজ

যে পথে ঈশ্বর আসে সেই পথে কোদাল চালাও৷ ভাঙো..       ভাঙো..            ভেঙে ফেল,                       নক্ষত্র সরাও৷ ফুলে ফুলে চতুর্দিক দৃষ্টিহীন৷            সংগ্রাম                     ফ্যাকাশে.. যাদের ঈশ্বর মানো তারও বুকে লাল জমে আছে৷

সমাস

তফাত বুঝিয়ে দিলে উত্তরের তুমুল প্রণয়৷ পা যুগল ডুবে আছে সাহারার থেকে বহু দূর যতটা অনুশীলন, তার নিচে প্রত্যাখ্যান, ভয়৷ শিথিল গাড়ির চাকা খুলে আসে সাম্যের আধারে৷ তুমি ও আমার মাঝে                         সাধনা ও সংগ্রামের ফাঁক৷ বিভ্রমের আগে জলের সমতা যদি মুছে দিত মধ্যবিত্ত ত্রাস৷ অনুরাগ ভিজে গেলে মৃত তারাটির বুকে উড়ে যেত ঝিনুক, বিশ্বাস৷ পরিধীর সীমিত বিস্তারে.. মৃত্যুকে আঘাত করে শ্রাবণের বৃষ্টির খাতায় নাম লিখে বেঁচে থাকা যায়৷ জঞ্জালের ভার ঝেড়ে গাঙ্গেয় প্লাবনে পরিত্রাণ, কালের যাত্রায়৷ কিছুটা পেরিয়ে এলে মেঘ সমীহ এগিয়ে চলে উত্তরের পথে তোমায় জানাতে বারিষের ফোঁটা যদি শিখে নিত প্রেমের সমাস অনুষঙ্গ, প্রিয়জন, বহু বহু... দূরে বসে                                   প্রার্থনার ঝিনুক, বিশ্বাস৷

অভিশাপ

অবকাশহীন এক নৈঃশব্দের দেশে অতিথি হারিয়ে গেছে, যাক শবের কপালে আর কতটুকু বৃষ্টির দরকার? বহুকাল সাহারার বুক শ্মশান পেরিয়ে এসে বারিষে ভেজেনি৷ ফুটপাথে ঘামের বিলাপ৷ প্রেমের ছিবড়ে থেকে ক্ষোভ ভীষণ বিদ্রুপ! কার প্রাণ, কত দামে কিনেছে সময় নিঃস্বার দুয়ার থেকে... প্রতিটি আঘাত যেন বোবাদের অভিশাপ বয়৷

ঘুমন্ত মাধবী

দু-হাত দূরেই যেন শরতের মেঘ চোখ খুলে আতরে ভেজাবে বোধের জানালা থেকে ক্রমশই নিজেকে ওড়াই৷ চশমার ফাঁকে ফাঁকে কী ভাবে সময় গলে যায়!! ঘুমিয়ে রয়েছে উষ্ণতার বীজ মাটির ভেতর আমি ও আমার মাঝে দ্বন্দের প্রহর ধৃষ্টতায় বহুবার ছুঁয়েছি সে দেশ৷ ঠোঁটের রেখার কাছে ফিকে লাগে কাশ্মীর প্রদেশ৷ শ্রাবণের মেঘে যেন ঘুমিয়ে রয়েছে তাই আজও বারিষ আসেনি৷ এবার হারিয়ে যাবে... দুটি পথ যে যার বাসায় কত যে মাধবীলতা পথে ফোঁটে আর মরে যায়... মোহের নিদ্রার পাশে কোনোদিন হাঁটেনা সময়৷

আত্মবিশ্লেষক

আগাছা জন্মানো এক সভ্যতার ভিড়ে আমরা তার একনিষ্ঠ কীটের স্বরূপ৷ রেসের ঘোড়াটি কবে হারিয়েছে পথ... হু হু অন্তরের কাছে হেরে গেছে আত্মবিশ্লেষক৷ নিজেরই ভেতর থেকে সূক্ষ্মতর মৃতের আওয়াজে চান্ডধ্বনি বাজে, আগুনের কুণ্ড থেকে চুঁয়ে পড়ে জল৷ বিগত দিনের কাছে আগামীরা বড়ই ফ্যাকাশে হাঁপের আলোর চেয়ে অন্ধকার বড় ভালো আছে৷ পুকুরে কান্নার দাগ, ওই পারে সমুদ্র হা-ভাতে ভুলে গেছে জলাশয় বিদ্রোহ শানাতে৷ পথে পথে ছত্রাকের ভিড় মেরুদণ্ডহীন যুগ যৌবনকে লাঠি দিয়ে যায় বহু মহাকাল তাই বেঁচে থাকে খনির ভেতর৷ বিষণ্ণ হাওয়ার কাছে প্রতিটি ঋতুর রং চেনা সকল পথিক জানে                       গ্রীষ্মকাল কখনো নেভেনা৷

প্রতিচ্ছবি

ছুটিয়ে চলেছে পথ নিজেকে নিজের থেকে দূর অচেনা সাম্রাজ্য যেন বিম্বিসার করবে আমায়৷ মেঘে মেঘে যন্ত্রণার আদান প্রদান অন্ধকার স্রোত ধরে সময় পিছল হয়ে যায়৷ ঘৃন্যতায় ভেসে ওঠা মনের কঙ্কাল অর্ধচেনা, বিভীষিকা চোখে ক্ষতবহ্নি মৃতপ্রায়, দ্রোহ চূর্ণ বধির প্রথায়.. বিষাদ বিলোপ হলে নিজেকেই খুঁজে পাওয়া দায়৷ চিহ্নহীন ভ্রান্তিলিপি, মেঘে মেঘে অন্ধকার, ভয়.. এ স্রোত তোমার কেউ নয়৷ ধ্বংসহীন প্রতিচ্ছবি যে দর্পন তোমায় দেখাবে বিমূর্ত প্রতিক তার চিরকাল পূজ্যের পাতায়৷ বিষাদ ফুরিয়ে গেলে কে তোমার আগুন জ্বালাবে?