Posts

Showing posts from November, 2019

উদাসীনগঞ্জ

ছোট শহরের পাশে উদাসীনগঞ্জ, শেষ কোণে বসে আছে মাঠ৷ বহুকাল ধরে যেন সে'ই কোনো বিরহী সম্রাট৷ দূরে চার তালগাছে সূর্য নিভে ফুটে ওঠে রাত; বলয়ে ঘিরেছে যাকে কৃষ্ণচূড়া ফুলের মলাট৷  বাইকের পিঠে কেউ; কেউ হাঁটে, প্রেমের স্মরণে স্মৃতিস্নান৷ দু-পা মন্দিরের থেকে কখনো হাঁটেনা ভগবান৷  আকাশ তাকিয়ে দেখে একাকী চোখের তারা উঁচু;  যখন বৃহৎ ভাবো নিচু হয় ঘাড়, তোমাকেই অস্তিত্ব বোঝায়৷ শুধু শাক্ত হলেই কি মহাদেব আসেন বাসায়? এ মাঠের অন্ধকারে তারাদের স্নেহ, সমস্ত বিরহ গৃহে ক্ষীণ আলো পেতে দিয়ে যায়৷ মেঘের সীমায় যেন জ্যোৎস্নার চাদর মুড়ে রাতচরা পাখিদের শান্তি দিতে নেমে আসে কেউ৷ এভাবে হারিয়ে যাওয়া অন্ধকার বুকে আজও বিজেতাকে আঙুল দেখায়৷

সম্পৃক্ত

কিছুটা গোপন থাক অন্দরমহলে তারাটির বুকে যত দহন যন্ত্রণা আনন্দের মাঝে যেন নিভু নিভু জ্বলে ব্যতিরেকে সান্ধ্যকালে দ্বন্দ্ব, প্রতারণা৷ তবু ভালবাসা থাক, অবিমৃশ্য ধারা দূরে ঠেলে পুষ্পবৃষ্টি, বারিষের গান৷ হারানোর প্রয়োজনে কুয়াশাও আসে নিঃসঙ্গের প্রয়োজনে কবিতার ভাষা৷ দূর আলো, যাকে তুমি ভালবাসি বলো; প্রসারিত দ্বার তার, অন্তহীন পথ৷ যে জীবন তাকে প্রিয় দহন শেখালো সে ঋণের প্রতিদানে স্বর্ণের শপথ সে তোমায় মুক্তি দেবে, শান্তি দেবে আজ৷ উষ্ণতায় ক্লান্তি মুছে যুগের সফরে যুক্ত হয়ে তৃপ্ত হবে বিরল সমাজ, প্রেমটিকে রং দিলে অন্ধকার ঘরে৷ নিজেকে সাজিয়ে তোলো তারাটির কাছে চঞ্চল পায়ের কাছে বন্ধনের ফুল৷ হারানো সময় জানে কতটা ফ্যাকাশে, বাঁধন আলগা করা বিপদশঙ্কুল৷

মধ্যস্থান

গেঁথে নিই, পুঁতে নিই, নিজের ভেতর;  অবশিষ্ট যা আছে গভীরে,  হাতে নিয়ে নিঃস্ব হতে আসা৷ পুরোনো কাপড় ছেড়ে নিজেকে সাজানো যেন লুকানো আমিকে কোনো বিস্ময় প্রহর সজ্ঞা দিয়ে আকাশে ওঠায়৷ প্রথাহীন উৎসব দূরে ঠেলে যদিও বা আসে নির্মল বাতাসে প্রিয় গন্ধটুকু দিও  চুম্বক ও চুম্বনের মাঝামাঝি বসার সময়৷

মায়া

বিনাশের আগে যদি কিছু থাকে অমরপুরাণ,  প্রাণ তার কাছে ফিরে আসে৷ তৃষ্ণার আকাশে, ন্যুব্জ শরীরের ক্ষতচিহ্নে বন্যার প্রভাব নরম করেছে যত, কাঠিন্যের আড়ালে লুকিয়ে পরিপাটি করে রাখে পথ; আর সফেদ উঠান৷ ঝংকারে ঝংকারে কোন্ কঙ্কালের উলুধ্বণি বাজে! যেন তার রন্ধ্রে শেষ প্রেমিকের শরীর গজাবে৷ জীর্ণ এক পথ প্রিয় শ্বাস নেবে সুগন্ধির মাঝে; অবসান একজন্ম, কর্কট সময়৷ হে বৃক্ষ, আপন ভেবে যে তোমার উপাসনা করে ফুলেল সোহাগ দেওয়া তোমারও তো দায়৷ কণ্ঠটিকে সুর দিও গোপন মায়ায়৷

অন্তহীন

আশ্রয়ে লুকানো যত ভুয়ো প্রেম কথা.. বিদায় দুয়ারে লেখে তিক্ত নিরবতা৷ মুখোশের অভিমান শেষ দিনও থাকে নতুনের হাত ধরে অতীতের ফাঁকে৷ যে পাখিটি তীব্র রোষে বদ্ধগৃহহীন অন্য কোনো দ্বীপে তার স্বপ্নময় দিন৷ ক্ষীণ আলো জ্বলে থাকে মেঘের সীমায় বিরহ কঠিন হলে কণ্ঠ ছিঁড়ে যায়৷

কুহকস্রোত

অনুভব লেগে থাকে দেহে নয়; কুয়াশার ঘ্রাণ  যেভাবে শতাব্দি পরে সাদাকালো অতি প্রিয় ছবি আমাকে আমার কাছে আনে৷ আগুনও দেখেছি বহু, পুড়ে গেছি তারও চেয়ে বেশি৷ এমন নর্দমা যার সম্ভাব্য নিকেশি কিছু নেই৷ পর্দাপ্রিয় উষ্ণতায় বিপ্লব এসেছে, রঙিন পল্লব যেন ঘটা করে পন্য হতে চায়৷ কালো হতে হতে আলোকবর্ষের শেষে, গর্জনের চেয়ে বহু দূরে তার ঘর... সেই নদী ডুব দিতে ডাকে৷ গমক চঞ্চলা রূপে পরিত্রাণ করে নিশিশোক৷ অজানা কুহকস্রোত কী ভাবে যে প্রাণে মিশে যায়! সে কথা বোঝার পাতা নয়, তার পরিচয় শুধু মিশে থাকে পবিত্র পল্লবে.. পিশাচ আঁচের থেকে দূর কোনো স্নিগ্ধ অনুভবে৷