Posts

Showing posts from December, 2018

দংশন

অন্দরের দ্রোহের পাখিটি ত্রাণ গিলে মূর্ছা গেছে ভোরে৷ লহুর বিভেদে চাঁদের গহ্বর ছিঁড়ে কাঁটার প্রহার দংশন বিশ্বাসে৷ "পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ্ দুষ্কৃতাম" সুরাহায় তুলোর আশ্বাস৷ ত্রাসের নিদ্রায় জেগে জেগে ওঠে প্রাণ৷ দুর্ভিক্ষের দুয়ার সমীপে৷ অন্ধকার দেওয়ালে সাজানো৷ ওরা যারা প্রশ্ন করে... জ্বালানো প্রদীপ শ্মশানে ছাইয়ের ব্যথা কতটুকু বোঝে?                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

নিশান

গলিজ ঝুলের লেজ গড়ে আর ঝোলে নিপুণ জালিকা দেখে পতঙ্গের টান মাকড়শার নিঃসঙ্গ কোঠর৷ প্রাত্যহিক ঝঞ্ঝাপুষ্ট বিরহী শ্রাবণ৷ অন্ধকার গৃহহীন কবে... মূক শুধু বুকের অধীন৷ অসাড় ক্ষতের স্রোতে বিদিশার গান নিভু নিভু মোমবাতি ঝড়ের নিশান৷ শিঙ্গালীলা নিভৃতে দাঁড়িয়ে                  মাঝ পথে প্রেতের প্রয়াণ৷                 ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

মোচন

শীতাতুর ঝিলের ওপরে নরম সোহাগটুকু রোদ অনুরাগি রাত জাগা দোসর গা ঘেষে আবেগেই কিছু লিখে যায়৷ উষ্ণতা নিবিড় হলে দূর থেকে ছোঁয়া৷ এটুকুই প্রাপ্তি শূন্যতার শেষ ডিসেম্বরে৷ স্বপ্ন দেশ, শহরতলি, আলোকবর্ষ প্রান্তে বড়দিন না কী বড় চাওয়া পাওয়া রাত নিভৃত স্পর্শটি ঠোঁট থেকে সুতোর তফাতে নিঃশ্বাসের আঘাতে নিহত সহস্রাব্দ বিগ্রহের পূজা হীন ফুল৷ ওই... পথে রজনী মোচনা ফের গো পথিক ঢুকে যাও, ঢুকে যাও হে পৃথার অন্ধকার ক্ষত মেরুর বরফ হাতে যে তোমায় দহন শেখাত৷                    ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

কেন্দ্রীয়

বৃত্তিয় ইগোর মালা কেন্দ্র বিপরীতে ঘুরতে ঘুরতে নিস্তেজ চন্দ্রানী ঝিলের দর্পনে প্রতিচ্ছবি দেখতে জেগে থাকবো... প্রতীক্ষা শেষের ক্ষণে বারিষ প্রলাপ৷ কথার কুয়াশা নয়, ইতিহাসে ভুল সীমাহীন ভেজা অভিমান তবুও সঠিক বৃক্ষ, অনুতাপহীন৷ ঈশ্বরী বিধান৷ যে ধূলা ওড়ায় পথে পথে পায়ে তারও কিছু লেগে থাকে৷ শীতের গভীর রাতে সমিধের তাপে ক্ষয় হোক, ক্ষয় হোক, দীন  তুষের সমীপে৷                ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡   

উমেদ

কতটা কথার পরে চিনে নেওয়া, পথ কতটা চেনার পরে ফেরা? যতটা গোপন শুধু ততটুকু টান বুকের গভীরে ঢুকে গরূঢ় উড়ান৷ জলের ভাটায় দূরে দূরে শূন্যতার প্রকোপ প্রণালী নীরন্ধ ঝাড়ের মাঝে মুঠো মুঠো পাঁজরের হাড়৷ শাঁসের পিপাসা শুধু, খোলায় বিরাগ৷ আবার নতুন কোন গাছ বিবিধ রঙের উপাসনা উতলা চোখের কী বা দোষ? কবিতা প্রকাশ শেষে পান্ডুলিপি ছেঁড়া৷ নীরবে কপাট খোলে, শোভিত কপিশ কাঁপা কাঁপা ঠোটের আড়ালে জমে আছে পুরান বন্দিশ৷ উমেদ পায়ের ছাপ দেখে জানালার রডে রডে শীত নেমে আসে দীর্ঘশ্বাস বরফে শোয়ানো৷ পুরোনো শপথে গাড়ি ফেরেনা কখনো৷                ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

হাফ পোট্রেট

কুয়াশা শ্বাপদ দাঁতে শ্বাসের নালীতে প্রতিটি কথার শেষে বুক চেপে থাকে৷ মানবী দ্বীপের মতো, দূরে.. আলিঙ্গন মাঝে দুটি শহর তফাৎ সাড়া না পেয়েই বুঝি ঘুমিয়ে পড়েছ? নিঃশ্বাসের বাষ্প কোন চোখের দেওয়ালে আঁকে আর মুছে ফেলে ঠোঁটের পোট্রেট৷ ঘুমের বাদামি চোখে মায়াবী প্রদেশ৷ হে রাতের সড়ক তোমার বন্ধ রেখো সমস্ত সিগন্যাল। তুষারপাতের ভোরে হলুদ আলোটি.. আগুন হঠাৎ আসে দু-হাত ছাড়াতে প্রতিটি শীতের রাতে ফাঁকা ব্যাগ গননা কঠিন। পলক নামানো চাঁদ মেঘের ব্ল্যাঙ্কেটে স্পর্শটুকু ঘুমোবার আগে যে দেশের ঘুম নেই, প্রতিক্ষায় বাঁচে৷ আবেগের জ্যাম ঠেলে বহুদূরগামী ছেড়েছে আমায়, আমি শহর ছাড়িনি৷ কাছে ডেকো, থামিও সময়.. ছেড়ে যাওয়া সব ট্রেন স্টেশনের নয়৷                 ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

ভেজা এলবাম

রাতের প্রতীকি কন্ঠ হাত তুলে হঠাৎ দুয়ারে এলে তার চোখ খুঁজে দেখি বাদামী গোধূলীপাখি ওই নিঃশব্দে সময় ভেজা কুয়াশায় ফোনের আড়ালে৷ কতখানি উষ্ণতা পারদে? আর একটু রাত জেগে থাকি? তুমিও রেণুর মত জেগে থাকো আমার ভেতরে৷ সকালে উঠেই যদি উঠোনের এক কোনে প্রজাপতি ঘুমায় নীরবে.. দু চারটে অলিভ পাতা শুকনো এলবামে বারিষনামার ভোরে উড়ে যাবে জানি৷ রেখাও বদল করে হাত,  কেউ শুধু পেতে বসে থাকে৷ কালিতে সম্পর্ক ছেঁড়ে, কলম বাহানা৷ ক্ষতেরা তুলোর মত৷ ভিজে গেলে চুপসে যেতে দেখি৷                  ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

দর্পন

ঠিকানা গরিব হলে ধোঁয়াকুণ্ড বিষাদ বিলাসী যে কেউ ঠোকর দিয়ে আস্ত গাছ ঝরাতেই পারে৷ ফুলের সম্বল বোঁটাখানি আলগা করতে নেই৷ ক'টা সূর্য খালি চোখে দেখি? হাতে গোনা, বাকিরা গ্রহের মতো  ইতি উতি ধার চেয়ে ফেরা৷ আয়না তো মনেরই রূপ অসাবধানে প্রতিবিম্ব ভাঙে৷ না পুড়েই নাক্ষত্রিক স্বপ্ন মুখোশে যেটুকু আলো জ্বলে তা দানেরই৷ বিজ্ঞ খুলি অভিনয়ে কী ভীষণ পটু! ইস্পাত না হলে দর্পনের ফিরে আসা জ্যোতি  ঝলসে দিতে জানে৷ না সে পৃথিবীর, না তোমার, না আমারও৷                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

আড়াল

শূন্যতার দম্ভ নিয়ে শ্লথের গতিতে স্বর্ণ ঈগলের চোখে দীনের চাহনি না পাওয়ার মরুভূমি... বালি৷ মরুর জোনাকী বেদ - বেদান্ত মাখিয়ে ওড়ে, তার জ্যোতিটুকু দেখি৷ ওখানে শেকড় শেষে পূর্ণতার জল সে বলে আগুন ছুঁয়ে দিলে ধ্বংস সুনিশ্চিত৷ কিছুটা দূরেই ভাল ঊষর মাটিতে বড় বারিষের টান৷ কখনও কখনও এসে ফোঁটা ঝরে যাক৷ মিলন সুলভ হলে অচিরেই শেষ৷ গভীর সাগরে তবু মাঝে মাঝে ডুব দিতে যাব৷ স্পর্শে নয়, গন্ধে নয়, উত্তাপে ভিজিও৷ সহস্র শতাব্দি শেষে বায়বীয় পুঁথির আড়ালে চুপি চুপি বুঝে যাবে কেউ তুমি আমি বহুকাল চিটে আছি জন্মদাগ যেন৷                    ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

স্ট্রাগল

পথের ঘর্ষনে ফুল অসহায় পাথরের ন্যায় ঘষে ঘষে দিকভ্রষ্ট দর্শনার্থী ভীড়ের লাইন ভুলে যাওয়া বন্ধু হাত আগামীর বিরোধী সতিন স্টেটাসে ইগোর জ্বালা, গৃহযোদ্ধা পূর্ণ তিক্ততায়৷ যেটাকে স্ট্রাগল বলো... চিতার ভেতরে আসলে তা বাঁচার উপায়৷ শুকনো মজ্জা, শূন্য হচ্ছে দেশ বহতা জলের মতো অর্ধমৃত শব নীতিহীন সঞ্জীবনী দেদার বিক্রয়৷ শৈশব-সম্রাট ছিল যারা... প্রেতের মতোই ঘুরে শিকারের খোঁজ দিন-দুপুরে মরূর রাস্তায়৷ অভাবে মানুষ বড় সস্তা হয়ে যায়৷                    ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

সময়

আবার দুর্বল করো সতস্ফুর্ত হিম! যে ধোয়া পেরিয়ে এসে উঠেছে সময়.. আকাশের হাতছানি নিজেরই ভেতর৷ ঘড়ির ঘুর্ণনে ওঠে শূন্যতায় পূর্ণিমার চাঁদ৷ ধৈর্যের বিকল্প শেষ৷ নিশানায় বিজেতার ধ্বজ৷ চোখে পড়ে ঝুরো বালি যতবার পেছনে তাকাই৷ সামনে তার প্রতিচ্ছবি, পাথর-ই বাঁচার অন্তরায়৷ বর্তমান মাঝেই দাড়িয়ে আয়নার এপিঠ থেকে ভবিষ্যত বেশি দূরে নয় ছোঁয়াটুকু অনুভব, ওপারের প্রবেশ নিষেধ৷                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

সিক্ত

ভাষার বাধ্যতা নয়, কুঁড়ি থেকে বোধের উদয় পেছনে নীলাভ পথ, তারও আগে  নতুন প্রণয়৷ ভোলাটাই প্রথা, ব্যথা জমে জমে ধূসর পাহাড় শব্দে স্বপ্ন, চোখে মন, প্রথম বন্ধনী৷ জল, যারা বয়ে গেছে অতীত কান্নায় আবেগ লালন করা হৃদয়েরই দায়৷ ভিজে থাকা সত্যি ভাল ভেতরে ভেতরে৷ পুকুরের মতোই বিষাদ ফাটল গভীর হয় জলাধার শুকিয়ে গেলেই৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡