Posts

তফাৎ

ধ্রুবক, দানবী ক্ষিধে পরিণত, কথায় ভোলে না৷ দহন অসহ্য হলে তুমুল দুর্যোগ আবহাওয়া বদলে দিও ঝড়৷ শৈশবের মৃদু মৃদু ঢেউ যার ছিটে শহর গড়েছে৷ দু চোখে এনেছ ঘুম বারে বারে স্বপ্ন দেখবে বলে৷ তুমি ও ক্ষিধের মাঝে তফাৎ এটুকু... তুমি ছুঁলে ভুলে যাই তাকে বিপরীত হয়না কখনো৷

মুখোশ

শিৎকার, শিৎকারে ক্ষয়, গুণী চরিত্রের জয় পরাজয় ক্ষমায় ভুলিনি৷ যে স্পর্শ চেনেনি জরা, পরম বিশ্বাসে কুম্ভনিদ্রা পাশে বদরক্তে দৃঢ়, সুপ্ত লিপ্সার বিনুনি৷ চৌকাঠ পেরোলে ঘৃণা নিও কাব্য যার ধৃষ্টতার, শারীরবৃত্তিয়৷ কুণ্ঠার বিরাম নেই মুখোশ কে দিয়েছে তোমায়? ইতর তোষণ হলে আমাদেরই দায়৷ খুলে দিচ্ছ বস্ত্রখানি ভগিনীর, বিনিদ্র তৃষ্ণায়.. মহাকাব্য পুড়বে বলে ডুব দিয়ে আসে নর্দমায়৷

বীথিকা সঙ্গমে

খেজুরে আলাপ ছেড়ে বনবীথিকায় নিভৃতে রতির আত্মসুখ৷ পাখি ও পায়ের শব্দে আত্মমগ্ন, দেহে পলাশের সুগন্ধি তাড়না৷ প্রকৃতি কাপড় খুলে ভেঙে দিচ্ছে সতির সংযম৷ সভ্য পরকীয়া নয়, বন্যতার স্তবে উন্মুক্ত বুকের মাঝে নগ্নস্নান সত্যের নিয়ম৷

আহূতি

শেয়ানের বিষাদ ক্রিড়ায়                 বেঁচে ওঠে ভগ্নাশেষ প্রাণ কেবলই স্মরণ করে টেরাকোটা পেরিয়ে এলাম৷ আঁচড়েই ঠিকরে আসে জ্যোতি হৃদয় মিলিত হলে মৃত্যুরাও ক্ষমা করে ক্ষতি৷ কোন এক ভ্রমের মলাটে                  পরিচিত লেখকের নাম.. নগ্ন দ্বীপে অন্ধকার ছুঁয়ে নিজেকে নিজের থেকে বের করে আহূতি দিলাম৷

দাগ

জীবন বাঁচাবে বলে ঝাঁপ দিচ্ছ মূর্খের অনলে.. মুখোশে স্বরূপ ঢেকে ছদ্মবেশে দোষারোপ চলে৷ পিঠে কার চাবুকের দাগ? তোমাকে চিনিয়ে দেবে                 বিপরীতে আয়নার স্বভাব৷ যে কান্নার ভাগিদার নেই                      সমাজের নেই কোনো দায়... অস্ত্রকে আপন ভেবে মৃত্যুকেই স্বাগত জানাই৷                     ✍ প্রভাত ঘোষ ⚡

অপূর্ণ

আড়াল থেকে দেখবে আমার গায়ে অপার্থিব কান্না লেগে আছে বৃষ্টি থেকে পৃথক হয়ে ঝরছে তোমার নামে৷ বৃষ্টি যেদিন ভাসিয়ে যাবে, সামলে নেবে কান্না অহংকারী নাকের নিচে, ঠোঁটের কোণে পান্না৷ ধরতে গেলে পালিয়ে যাব ভয়ে নিজের অতীত চিনতে পারো পাছে শূন্য দিয়েই পূর্ণ হবে অস্বীকারের দামে৷

দূরত্ব

সে আসে দয়ার মতো, তাই দেখে নেচে ওঠে তৃণ, যেন তার জন্ম হবে বালির ভেতরে৷ কল্পনার পূর্বে কোন পরীও থাকে না৷ প্রয়োজনে পাওয়া যাবে সে বিশ্বাস কই? হাওড়ার ফুটপাথে, ব্রিজের কানাচে কারা না কী ভবিতব্য মাপে? এখন সে বিশ্বাসের কাঁটা আরও গলায় বিঁধেছে৷ ভুল করে ভবিতব্য যদি... বিশ্বাসেই কলম চালায়! ভয়ে ভয়ে ঝুলে পড়ি নিয়তির ঝুলের চাদরে৷ চরিত্র নির্লোম হলে কাছে আসা বিড়ম্বনাময়৷ যে ঢেউ অন্যের ঘাটে সংসার পেতেছে তার স্পর্শ বিপজ্জনক৷ গণ্ডারের ত্বক হলে খেলেও আরাম, আছাড়ের ব্যথাও লাগে না৷ ভিন্নতা স্ফটিক হলে পালানোই প্রথা? পাথর হবার পরও অতীতের রেশ থেকে যায়৷ তৃপ্তির হিসেব যত সময়ের হাওয়ায় উড়েছে.. জীবন ও হৃদয়ের দূরত্বের স্পষ্টতর রূপ আঁকা হয় ভাঙনের আগে৷ এ দূরত্ব ভাঙনের নয়৷ দিনে-রাতে বৃক্ষ হয়, যেভাবে সময়৷

পেখমবাড়ি

অন্ধকারের সবুজ পেখমবাড়ি পেছন ফিরে হাঁটছি অজান্তেই ছায়ার শেকড় গোটাচ্ছে পাততাড়ি রোদের তো আর বাপের বাড়ি নেই৷ জলের ওপর সাজালে মৃত্যুকে পুকুর পাড়ে স্টেটাস ডোবার দায় জীবন যখন লোভ নিয়েছে টুকে.. দহন বাতাস পেরোচ্ছে কান্নায়৷ নিমন্ত্রণে মেঘের খবর কই? জানলা জুড়ে প্রেমিকি উদ্বেগ ছোট্ট অমল খোঁজে না আর দই পত্র তোমার ফিরিয়ে দিলে মেঘ৷ পেখমবাড়ির দরজা খোলা আজও শরিক বাড়ে রাস্তা পেরোলেই... ভাঙার আগে স্বপ্ন দেখে জাগো ওই বাড়িতে ভোটের ব্যালট নেই৷               ✍ প্রভাত ঘোষ⚡

রবীন্দ্রনাথ

নিভৃত হৃদয় ছবি শতবর্ষ ধরে কান্নার প্রহরে জীবনের উন্মেষ বা শোক একই পাত্রে পূর্ণ অবস্থান৷ তোমার আশ্রয় গৃহ জন্মের প্রমাণ৷ যুদ্ধহারা শিথিল আবেগে বন্ধ্যা-বৃন্ত শবমূর্তি রূপে বিষণ্ণ পাখিটি কাঁদে বিভ্রমের হারানো পালকে৷ সেই দ্বারে সমুদ্রের প্রবেশিকা রেখে ব্রহ্মাকে করেছ ব্রহ্মদান৷ কণ্ঠহীন জরায়ুর বুকে আজ মহাসাগরের গান৷ যখনই ঘিরেছে অন্ধকার তোমার প্রহার... দর্শন ও অনুভবে তুমি ও আমার অভিসার৷

যে ঝড়ে দধীচি জন্মায়

যে ঝড় আসেনি তার প্রয়োজন ছিল? গোছানো মৃত্যুর পরে স্বাধীনতা কত সেসব জানেনা ওই গৃহস্থ যে দ্বারে ঝড় তার নিশান রাখেনি নীরস, শান্তির মৃত রূপে৷ গতি ও ধ্বংসের মাঝে বাঁচার অভ্যাসে রাহুর গ্রাসের শোক দধীচিকে যখম করেনা৷ নিঃস্ব হোক.. শান্ত হোক.. জলধীর গ্রন্থাগারে দারিদ্রের স্নানে শোকগঙ্গা যাদের নিয়ম.. (সংবাদ উল্লাস করে শুধু)                সে গ্রন্থের মলাট থাকেনা৷ বিলাসী চেয়ারে যত ছাপ দেখে আর শুয়ে শুয়ে বিলাসদরদী৷ ধ্বংসের পাঁজর উঠে গড়ে নেওয়া নতুন কাঠামো প্রশ্ন করে কার ঘরে গ্রন্থকার ছিল.. যে তোমায় মনীষী বানালো৷ যে ঝড় আসেনি তারও প্রয়োজন ছিল৷                  ✍ প্রভাত ঘোষ⚡