Posts

এসো মেঘ

তারও পরে কোন মেঘ জমে যাবে৷ দোটানার অলীক ভাবনাহীন এক জমায়েত৷ দূর থেকে গভীর নক্ষত্রবুকে                                 লেখা কিছু চিঠি মুক্তির আনন্দে ঠোঁটে ঠোঁট           ছোঁয়া, জাহাজের মতো                    দোলায় দুলবে আজীবন৷ বাতাসের থেমে যাওয়া নেই৷               পূর্ণ করো,                        পূর্ণ করো                                   মেঘ৷                      ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

সাময়িক

একদিন এসেছিল নদী হয়ে দুপুরের তাপে, তখন সময়ে মধুমেহ, কে আর হিসেব লিখে রাখে! প্রাথমিক প্রেমে ক্ষির,                           মনে মনে মেলে ধরা ডানা.. শুকনো মাটিতে গাছ জলহীন কখনো বাঁচেনা৷ ভেজা ভেজা দিনগুলি খন্ড খন্ড সুখের কবিতা... গায়ক পাখির পাশে দিনঘুমে ডুবে থাকে শ্রোতা৷ হাওয়ার বদল হয়৷ আকাঙ্খায় বদলের হাওয়া৷ নিঃশ্বাস লুকান রাতে মাঝে মাঝে পাশ ফিরে শোয়া৷ অতীতের ছায়াছবি গোধূলীর দাম দিয়ে কেনা৷ টিক টিক চলে, শুধু..                               ঘড়ি আর                                            সময়                                                  মাপেনা৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

দহন

ব্যর্থতা পাতালে নামে, অশনির গুহার আঁধারে৷ পেছনে ছড়ান কত ভুল!!                             শব্দের কাটকুট খেলা৷ ছাপোষা চাকুরি ক্ষেত,                          সা রে গা মা                                          ধুন                                               মেখে                                                      বাঁচা৷ প্রেম সলজ্জ, কোঠায়..                          মধ্যবিত্ত জলের আধারে          কতটা চাহিদা ধোওয়া যায়? তবু তারা বলে ভালবাসে৷                               ভীতু মন দূরান্তে পালায়৷ যোগ বিয়োগের প্রফেশনে                            ভালবাসা কাঁদে, মন শোনে৷ চোখে চিকচিক করে ফোঁটা ফোঁটা আবেগের কণা৷ পোড়ানো দুপুর ঠিকই নেভে, রাতে তার দহন কমেনা৷                      ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

তৃপ্তি

অপেক্ষার তৃপ্তি, না কী তৃপ্তির অপেক্ষা! অর্ধমৃত পিরামিডে জমা বহু শতাব্দীর স্পৃহা৷ পারসিক ড্যাফ ধ্বনি আকাশের প্রতি কোণে কোণে... শুকনো যেটুকু ছিল, ভেজার অপেক্ষা অবসান৷ ঝংকৃত ফোঁটায় আহ! ... কী মধুর আদুরে সে গান৷ স্পর্শ...        স্পর্শ...              খোলা বুকে                            সহস্র অপ্রাপ্তির ক্ষিধে৷ যেটুকু উধার ছিল চুমু,                               ঠোঁট তুলে                                              যদি                                                   চেয়ে নিতে..!!                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡                    

সেলুকাসকে লেখা আমার চিঠি

এ কোন দেশের চিত্র এঁকেছ মৈত্রির ক্যানভাসে? পিথাগোরাসের সূত্রে অমিল, বৈরির তরোয়ালে৷ ঝাঁঝাল গন্ধের ঝাঁকে নাক, দশক, শতাব্দী অগ্ন্যুৎপাত, এক রক্তে বিষের পাহাড়, বিভাজন অন্তরালে৷ রাষ্ট্র! রাষ্ট্র! বিচার বধির, মৃত চারা, শিশুলতা৷ আঁধারের বুকে বুকে জ্বলে ওঠে নষ্ট মানবতা৷ বুলেট, বোমার চোখে রাত, বিপন্ন সভ্যতা সহবাস৷ কাশ্মির, কৈলাস জুড়ে মৃত কাল, আদিমতা৷ ঈশ্বর প্রমাণে প্রতিঘাত, একেশ্বরে বিভেদ, কল্যাণ৷ শৈব, দৈব প্রতিষ্ঠা পাঁজরে আমি সেরা এটাই প্রমাণ৷ হরপ্পার বিবশতা ঘিরে,  তাজমহলের ভিত খুঁড়ে, নোনাজলে হাঙরের মাঝে বেঁচে আছি মৃতের সমান৷ মুঠোর ঝরেছে  বালি , শ্বাসে কালাহারি অনুপ্রাস৷ কতখানি খোয়া গেলে দেশ ফিরে পাব সেলুকাস?                     ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

বিহঙ্গীত

সাধ্য নেই জাহাজ টানার, তাই দাঁড় বেয়ে ডিঙি টেনে আনি মধ্যবিত্ত বন্দরের বুকে৷            আবছা কুয়াশা ঘেরা             সাগরের বালি তটে শীতল উত্তুরে হাওয়া                   অনুঘটকের মতো, অঙ্গুলিবন্ধনে বাঁধে৷ সাহেবের ক্যাসিনো, রেস্তোরা, মাদকতা ছুঁয়ে যেতে পারেনি কখনো মুক্তপ্রাণ বিহঙ্গীত মন৷                      শ্বাসরোধ হয় ডান্সবারে,            (তাই) বারে বারে ফিরে নায়েগ্রার ধারে                      উকুলেলে ধুন-এ প্রেম খুঁজি৷ রঙিন তোয়ালে গোনে  খুচরো, প্রেমিকা, যার প্রেমিকের গন্ধ ভাসে মেলোডিক রিডে৷            শেষ রাতে গুটিকয় আদরের ঝুলি                       শান্তির সন্তোষে হাসে৷                    ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

অনুক্ত ( ত্রৈভবি )

১) সম্পর্কের মিথেনে  বিষাক্ত শ্বাস বেয়ে হৃদয় প্রকোষ্ঠে  যন্ত্রণায় তপ্ত নবাগতা ফুল৷ ২) আস্তাকুড়ে দূর্বার মতই অবহেলা, অপ্রাপ্তিতে বাড়ে কেউ পূজার বেদিতে যাবে বলে৷ ৩) তুলে ধুয়ে নিও হৃদয়ের  স্রোতে, যদি আজন্ম প্রেমিক-বুকে  শান্তির সোহাগ পেতে চাও৷ ৪) খরবায়ু, মৌসুমি ঝঞ্ঝাট, মরু শেষে যদি ফেরো সীমান্ত কাশ্মীরে,  স্বর্গ আলিঙ্গনেচ্ছায় বসে৷               ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

স্রোত

নীলাভ চোখের ডালে রক্তাক্ত হৃদয় খুলে রাখা, দেখেছ প্রেয়সী তুমি ঝুলে থাকা হৃদয় জালিকা? বোধি গাছে নিত্য ওম ধ্বনি, তপস্যায় ডাক নাম শুনি৷ উই ধরে ক্ষয়ে আসে প্রেমিকের অধর প্রতিমা৷ সংসার অধ্যায় শেষে দিনান্তে ঝাপটা জল কণা, দিনের হিসেব করে প্রেম যাকে ডিঙাতে পারেনা৷ সোহাগ অনেক বাকি তাই, বিকেলে উড়িয়ে দিও ছাই, গোধূলি আলোর সাথে প্রাণ ত্যাগে শরিক হয়োনা৷ রক্তচক্ষু, অনুরাগী বুক, চোখে মণি, ফিরিয়ে দিয়েছি তাকে, ডেকেছেন বিধাতা যখনি৷ আরও কিছু স্রোত পথে বাকি, ফেলে আসা রাতের জোনাকি... নিবিড় আকাশে রাতে তারা আঁকা নক্ষত্রাণি৷ শেষ তেলে আলো জ্বেলে বেঁচে দেখ ধূলোর বালিকা৷                     ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

কক্ষপথ

আকন্ঠ মদের বিনিময়ে দু-দন্ড শান্তির খোঁজ৷ নুড়ি কাঁকরের পথে পথে ভিনদেশী হওয়াই সহজ৷ বালি ঢাকা ধান জমি                        চাষির জীবন্ত কবরের বুক জুড়ে নেমে আসে শনি৷ কপালের বলিরেখা মুছে, অবিরাম দুর্ভাগ্য-প্রহারে...       শান্তিসুধা ঠোঁটে ধরে কেউ তো আসেনি৷ নীরেট গোলক যেন কক্ষপথে ঘুরে চলে রোজ৷ বদ রক্ত জমে জমে ক্যানসারে পরিনত বুক৷ মদের নেশায় ভোলা জায়ুহীন মনের অসুখ৷ ক্ষয়ে যায় ক্ষয়ে যায়, সয়ে যায়                                        রাতের আঁধারে কেঁপে কেঁপে উঠে জল মোছে শতাধিক রোমকূপ৷ নিষ্প্রাণ প্রতিমা, তবু গড়িয়েছে এগারোর চাকা৷       দু-দেশের সীমা, শেষ কাঁটাতার মাঝে,                  ইশ্বরও শেষ করে সুখ॥                    ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

মৌচাক

পসার সাজান ঘর৷ রঙিন, কোমল কারিগর৷ যেন কোন স্নিগ্ধ পাখি,                            সাগরীয় নিশীথ জোনাকি(র) যত্নে বন্দি কিছু বুক চেরা কঠিন পাথর৷ সে বুকের সহনশীলতা, মৌচাকে আকন্ঠ দ্বিধা৷ বুঝি কোন আনকোরা ঢেউ৷                                      বালিতটে গভীর আঁচড়৷ প্রাচীন সমাধী থেকে জেগে ওঠে মৃত বুদ্ধ৷ দু-ফোঁটা বৃষ্টির প্রেমে গড়ে ওঠে নতুন শহর৷ উদ্ভিদের আলিঙ্গন, দুই দেশে অতীত খনন৷ লেখনী আমার, তার সুর৷ সোহাগের পথ বহু দূর৷ তারি মাঝে সাম্রাজ্য পতন৷ প্রাচীন হাতির চালে ফিরে দেখা ঝিলটির জল৷ শুঁড়ে শুঁড়ে অনুরাগে,                             নিভে আসে দ্বিতীয় প্রহর৷ পাখিগুলি নীড় বদলালে...                                রোমন্থন প্রতিটি বছর৷         সকল বাঁধন শেষে কাঠেই ঘুমায় কারিগর॥                          ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡