Posts

ঋণ

অসময়ি বৃষ্টি ফোঁটা বইয়ের পাতায় শুন্যতায় লুপ্ত অভিমানী জাগাও, জাগাও তাকে মৃতগঙ্গা পাড়ে কলুষে আগুন জ্বালো ঘুমপাড়ানির৷ কোকিলের আত্মা উড়ে বিনয়ে বিলীন.. কর্কশের মূল্য ধার্য করি৷ হে বাতাস ঋণী রেখো, দয়িতার বেশে সুদ নিতে এসো প্রতিদিন৷ শিশির ও কুয়াশার মাঝামাঝি এসে শিথিল রোদের ঢেউয়ে স্নান৷ সেসব ঋণের শোধ সবুজ পুড়িয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সূর্য অগ্নিকুণ্ড নিয়ে ফেরো ঘর৷ পাখিদের ডানা পুড়ে নিভে আসে রবীন্দ্রপ্রহর৷ কোন দিক, কতদিন... পথ ভুলে গেছে আষাড়-শ্রাবণ দালান ও রাজপথে যন্ত্রাংশের খুলি কোন মন্ত্রে বেঁচে যাবে অর্ধমৃত প্রজাপতিগুলি?

নির্বীজ

যে পথে ঈশ্বর আসে সেই পথে কোদাল চালাও৷ ভাঙো..       ভাঙো..            ভেঙে ফেল,                       নক্ষত্র সরাও৷ ফুলে ফুলে চতুর্দিক দৃষ্টিহীন৷            সংগ্রাম                     ফ্যাকাশে.. যাদের ঈশ্বর মানো তারও বুকে লাল জমে আছে৷

সমাস

তফাত বুঝিয়ে দিলে উত্তরের তুমুল প্রণয়৷ পা যুগল ডুবে আছে সাহারার থেকে বহু দূর যতটা অনুশীলন, তার নিচে প্রত্যাখ্যান, ভয়৷ শিথিল গাড়ির চাকা খুলে আসে সাম্যের আধারে৷ তুমি ও আমার মাঝে                         সাধনা ও সংগ্রামের ফাঁক৷ বিভ্রমের আগে জলের সমতা যদি মুছে দিত মধ্যবিত্ত ত্রাস৷ অনুরাগ ভিজে গেলে মৃত তারাটির বুকে উড়ে যেত ঝিনুক, বিশ্বাস৷ পরিধীর সীমিত বিস্তারে.. মৃত্যুকে আঘাত করে শ্রাবণের বৃষ্টির খাতায় নাম লিখে বেঁচে থাকা যায়৷ জঞ্জালের ভার ঝেড়ে গাঙ্গেয় প্লাবনে পরিত্রাণ, কালের যাত্রায়৷ কিছুটা পেরিয়ে এলে মেঘ সমীহ এগিয়ে চলে উত্তরের পথে তোমায় জানাতে বারিষের ফোঁটা যদি শিখে নিত প্রেমের সমাস অনুষঙ্গ, প্রিয়জন, বহু বহু... দূরে বসে                                   প্রার্থনার ঝিনুক, বিশ্বাস৷

অভিশাপ

অবকাশহীন এক নৈঃশব্দের দেশে অতিথি হারিয়ে গেছে, যাক শবের কপালে আর কতটুকু বৃষ্টির দরকার? বহুকাল সাহারার বুক শ্মশান পেরিয়ে এসে বারিষে ভেজেনি৷ ফুটপাথে ঘামের বিলাপ৷ প্রেমের ছিবড়ে থেকে ক্ষোভ ভীষণ বিদ্রুপ! কার প্রাণ, কত দামে কিনেছে সময় নিঃস্বার দুয়ার থেকে... প্রতিটি আঘাত যেন বোবাদের অভিশাপ বয়৷

ঘুমন্ত মাধবী

দু-হাত দূরেই যেন শরতের মেঘ চোখ খুলে আতরে ভেজাবে বোধের জানালা থেকে ক্রমশই নিজেকে ওড়াই৷ চশমার ফাঁকে ফাঁকে কী ভাবে সময় গলে যায়!! ঘুমিয়ে রয়েছে উষ্ণতার বীজ মাটির ভেতর আমি ও আমার মাঝে দ্বন্দের প্রহর ধৃষ্টতায় বহুবার ছুঁয়েছি সে দেশ৷ ঠোঁটের রেখার কাছে ফিকে লাগে কাশ্মীর প্রদেশ৷ শ্রাবণের মেঘে যেন ঘুমিয়ে রয়েছে তাই আজও বারিষ আসেনি৷ এবার হারিয়ে যাবে... দুটি পথ যে যার বাসায় কত যে মাধবীলতা পথে ফোঁটে আর মরে যায়... মোহের নিদ্রার পাশে কোনোদিন হাঁটেনা সময়৷

আত্মবিশ্লেষক

আগাছা জন্মানো এক সভ্যতার ভিড়ে আমরা তার একনিষ্ঠ কীটের স্বরূপ৷ রেসের ঘোড়াটি কবে হারিয়েছে পথ... হু হু অন্তরের কাছে হেরে গেছে আত্মবিশ্লেষক৷ নিজেরই ভেতর থেকে সূক্ষ্মতর মৃতের আওয়াজে চান্ডধ্বনি বাজে, আগুনের কুণ্ড থেকে চুঁয়ে পড়ে জল৷ বিগত দিনের কাছে আগামীরা বড়ই ফ্যাকাশে হাঁপের আলোর চেয়ে অন্ধকার বড় ভালো আছে৷ পুকুরে কান্নার দাগ, ওই পারে সমুদ্র হা-ভাতে ভুলে গেছে জলাশয় বিদ্রোহ শানাতে৷ পথে পথে ছত্রাকের ভিড় মেরুদণ্ডহীন যুগ যৌবনকে লাঠি দিয়ে যায় বহু মহাকাল তাই বেঁচে থাকে খনির ভেতর৷ বিষণ্ণ হাওয়ার কাছে প্রতিটি ঋতুর রং চেনা সকল পথিক জানে                       গ্রীষ্মকাল কখনো নেভেনা৷

প্রতিচ্ছবি

ছুটিয়ে চলেছে পথ নিজেকে নিজের থেকে দূর অচেনা সাম্রাজ্য যেন বিম্বিসার করবে আমায়৷ মেঘে মেঘে যন্ত্রণার আদান প্রদান অন্ধকার স্রোত ধরে সময় পিছল হয়ে যায়৷ ঘৃন্যতায় ভেসে ওঠা মনের কঙ্কাল অর্ধচেনা, বিভীষিকা চোখে ক্ষতবহ্নি মৃতপ্রায়, দ্রোহ চূর্ণ বধির প্রথায়.. বিষাদ বিলোপ হলে নিজেকেই খুঁজে পাওয়া দায়৷ চিহ্নহীন ভ্রান্তিলিপি, মেঘে মেঘে অন্ধকার, ভয়.. এ স্রোত তোমার কেউ নয়৷ ধ্বংসহীন প্রতিচ্ছবি যে দর্পন তোমায় দেখাবে বিমূর্ত প্রতিক তার চিরকাল পূজ্যের পাতায়৷ বিষাদ ফুরিয়ে গেলে কে তোমার আগুন জ্বালাবে?

অধঃস্তন

কাঁচের ভেতরে এক ক্রমশই অধঃস্তন শিকারীর ছায়া খুঁড়ে চলে প্রাচীন বিষাদ৷ আলো ও আঁধার যেন আমি ও আমারই মাঝে বিবাদের উল্টো কোনো পিঠ৷ মৃত্যুর পূর্বেই বুঝি মৃত্যুকুণ্ডে প্রবেশ করেছি! হায় আলো! হায় ধন! উন্মুক্ত আকাশ ছেড়ে বোতলের গর্ভে নিলে স্থান৷ যে আলো জ্বেলেছ অন্ধকার থেকে মুক্তির আশায়.. তারই তলে মৃত্যুগর্ভ প্রায় ত্যাগের রাস্তায় লোভ পথিক হলেই..                                     বিশ্ব শান্তিগন্ধে পৃক্ত হবে৷

পুরুষ

পুরুষ ঝড়ের সন্ধ্যার শেষে দাঁড়িয়ে রয়েছে, মাঝে মাঝে মাথা নেড়ে অস্তিত্বের হাওয়া দিয়ে যায়৷ আড়ম্বরহীন এক জীবনের ধারা, তোমাকেই স্বস্তি দেবে বলে৷ প্রচণ্ড দহনের দিনে খুঁজে দেখো, যথাস্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছে কাঠিন্যের তালগাছ রূপে৷  অভিমানী বোঝেনা সে ক্ষয়৷ কে ছায়া বিলোবে তাকে যার পথে হাঁটে না সময়?  দোষ দিয়ে যাও হে পথিক... যুগে যুগে দাবি করো যাকে, সে মাথায় বারিষ থামায়৷ হয়তো হারাবে তবু হারেনা কখনো সে পুরুষ, তার প্রত্যয়৷

বারিষনামা #১০

বিরহী দিনে আজ তর্ক থাক কে ছিল কার ভুলে অন্ধকার গরিমাহীন সাক্ষি ব্যালকনি খুচরো পাপ জমানো মেঘ বড় দূর্ণীবার উষ্ণ ঋণ৷ ঠোঁটের আলপনা শরীরময় সমূহ কল্পনা স্বার্থহীন নিদ্রা শেষ নরম কার্ণিশে ঝড়ের ভয় বাঁচার ভঙ্গিমা অর্বাচীন মৃত্যুদেশ৷ বিরহ ফিরে আসে আকাঙ্খায় হারানো পথে যার পায়ের ছাপ ইতিহাসের বন্ধনীর ধোঁয়া অন্তরায় দ্যোতনা পত্রের ভালই থাক ছত্রাকের৷ বিস্মৃতির মতো শান্তি কই? নতুন পুড়ে যায় তার্কিকের গ্রন্থকার বারিষ গ্রাস করে সমূহ বই জলের ভার বড় নিগ্রহের শূন্যতার৷