Posts

শ্মশান থেকে পালিয়ে

শ্মশানে উঠেছে মালবিকা,                             আলোকিত বিপন্ন গুহায়৷ ঝলসানো সংসারে আগুনের তাপ ছোঁয়া নিপুণা রমণী প্রতিটি প্রহরে মূর্ছা যায়৷  দিনে রাতে অসম বিভেদ, বাকল উপড়ে বেজে ওঠা বীণা থেকে ওঠে হার্দিক গর্জন৷                               ক্ষয় চাপা হৃদয় ক্রন্দন৷ হঠাৎই উড়েছে মালবিকা চিতা ঠেলে ছাই - কালি মেখে৷ আকাশে রোদের দেখা আজ৷  উড়ে যাও জিজীবিষা ধরে,                                ছুটুক পেছনে বরকন্দাজ৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ. ⚡

স্ত্রৈণ

ক্ষতি নেই কুড়ুল তোলার নৈশ ভোজে, হৃদয় মশাল দুর্গমতা ডিঙ্গতে শেখায়৷ দ্বিধাহীন ভয়ের আভাস দৈব সম, আদর সুবাস প্রাত্যহিক-ই আগুন নেভায়৷ সে আমার উজাড় বুকের মৌন পাখি সাগর সফেন সমুদ্রতে নাবিক যখন.. মেঘেদের উঁচিয়ে আঙুল স্ত্রৈণ বায়ু জোয়ার আনুক, স্বপ্ন মেখে নিজের মতন৷ শরতের শিউলি ফুলের ঘ্রাণ মাখা শৈলীতে তৃণের বক্ষ জুড়ে পুলক বাহার৷ ভোর খোলা কোকিল কূহুর ধৌত প্রেমে সোহাগ মুকুট উচ্চ শিরে জাহাজ নামায়৷                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

অভিমুখী ( লিমেরিক )

জীবনের লঞ্ছ ছোটে অভিমুখে নতুনের সন্ধানে৷ বাঁচার রসদ দুর্বার গতি বৈশাখ বয়ে আনে৷ বাসন্তি সুর, গন্ধ শেষে সহজাত ঘুর্ণন ওভ্যেসে খসা তারা ভুলে আগামীকে দেখি অতীতের খন্ডনে৷                   ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

প্রহরশেষে

Image
আমার বিকেলটুকু তোমার ছোঁয়ায় আটকে থাক৷ প্রত্যন্ত প্রহরশেষে পড়ন্ত রোদকে আলতো ছুঁয়ে দুজনে সময় ভুলে হাঁটতে হাঁটতে ফেরি-লঞ্চঘাট৷ শহর ব্যস্ততা মাখে,  আদুরে বাতাস থেকে দূরে৷ প্রেমিকা দেখিনি আমি, গঙ্গার হাওয়াই ছুঁয়ে গেছে৷ নদীতে মাঝির দল, নৌকায় জীবন ভাসা, ঢেউ.. সন্ধের জোয়ার ছাড়া ওদের খবর রাখেনা কেউ৷ ফিরছি অতীতে যেন, লুকান মাটির বুক খুঁড়ে.. অচেনা মনের ক্ষত এমন সময় ভাল লাগে৷ কবে যে কোথায় কোন পাওনা গণ্ডা, গরমিল আছে.. সন্ধ্যায় হিসেবি মন পুরান সেসব খাতা খোলে৷ ফুরফুরে বাতাসে জাগে স্মৃতির কবরে শোয়া বীজ৷ আবহাওয়ায়, আকাশে বাতাস মেশার কথা ছিল৷ শুকানো বালির বুকে কবেইবা বেড়ে ওঠে গাছ? ক্যাকটাস উঠেছে কোনো, কখনো কখনো কাঁটা বেঁধে৷ রাত্রের লঞ্চের শেষ সাইরেনে ঘুম ভাঙে পাড়ে বসে আবার ফিরতে হবে ঊর্ণাজাল বাঁধা শহরের বুকে৷                        ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡                                                     

নপুংসক

উত্তপ্ত রডের ফলা বিঁধে রক্তাক্ত যোনীর বুকে উঠে আসা রক্ত দিয়ে বারুদের স্তুপ গড়া হোক৷ নপুংসক রাষ্ট্রের ধ্বজায় বিদ্রোহি ইঞ্জেকশন মারো৷              জাগো মৃত সংবিধান, জাগো৷ রাস্তায় রাস্তায় ভারতের লাশ গুনে নির্বাক ক'দিন থাকা যায়?       ধর্ষকপ্রহরী মহামানবের গুহাতে লুকায়৷ ইন্টারনেটে সুখের খোঁজ, হাতল ছুঁড়ছে হাত৷      ধর্ষক নগ্নতা মাপে ভারতমাতার বুকে...               ক্যানসার, কামের অসুখে৷ তবু যারা সয়ে যায় ক্ষয়...                        কতখানি মানুষ, সংশয়৷                 ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

সংযোজন

                  যে কালবৈশাখী ঝড়ে বাতি নিভে যাওয়া অন্ধকারের পরোয়া না করা তেজস্বী উদ্যমে হাত ধরে দূর মহাকাশ পাড়ি দিতে হওনি পিছপা...                     সেই স্পর্শে রন্ধ্রে রন্ধ্রে উন্মুক্ত তুফান তুলে ভালবাসা মিশিয়ে দিয়েছি রক্তের প্রতিটি কণায় কণায়৷                    আমার কবিতা হয়ে ওঠা শব্দের অক্ষরে সংযোজন হয়েছে এঞ্জেল৷                  নির্বাক সমুদ্র ঢেউ তুলে যেভাবে বালির বুকে ছাপ ফেলে যায়...    ঠিক সেভাবেই ভালবাসা লিখে ফেলি কবিতায়৷ সময়ে দৃষ্টান্ত উঠে আসে৷ বিশ্বাস আসন্ন ফল৷      সোপান মঞ্জিল চেনে৷ স্পন্দন আমৃত্যু, অনর্গল৷                           ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡          

রেনকোট

আমৃত্যু প্রাচীন জল বয়ে যেভাবে সমুদ্র হয় নদী... শুকনো পাতার ঝরা শেষে,                             নতুন মুকুল ফোটে গাছে৷ শেষের পরেও এক শুরু আসে, কচি ঘাসে দূর্বার তেজস্বী ধারা৷ পুরান শেকড় ছাড়ে নতুনের বুকে...                              বর্ম যেন, অক্ষয়ী পাহারা৷ মাথার ওপর জমা মেঘ, তবু পথে ছুটে যেতে হয়৷ ছাতায় শিক্ষার নাম লেখা,                                  রেনকোট নয়া পরিচয়৷                       ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

ঈশ্বরবন্দী

ধর্ম থেকে বর্ম উঠে                    মৃত শেকড়ের শিরে চন্দ্রবিন্দু বসে৷ আসিফা, বিদিশা, রাধার রেচনে অনায়াসে তরবারি ক্রীড়া৷ বিধর্মী মাংসল যোনী যেন ঠিক কোন                                      শক্তি প্রদর্শনী ক্রীড়াঙ্গন৷ রামায়নজ্ঞানহীন ভক্ত হনুমান থেঁতো করে                                           নির্জনে নিষ্পাপ মুখ৷ পাথর সমুদ্র বাঁধে'না আর... জুড়েনা সাগর,                                  বিবেকে বিভেদ গেঁথে যায়৷ ত্রিশুল কাপড়ে বাঁধে স্বর,           আল্লার বান্দায় আনকোরা যোনী খুঁজে                                         প্রাণভরে মসজিদে খায়৷ লজ্জার সমুদ্রে গীতা, কোরাণের সামুহিক ক্ষয়৷ ধর্ষনঝড়ে উল্লাসি যারা, তারা কেউ সমাজের নয়৷ মৃত রাজা৷ রাজনীতি, ক্ষমতার বিষম লড়াই৷ টর্চ জ্বেলে সূর্যকে দেখার প্রতিভাও                                            মূর্খতার-ই পরিচয়৷          রাঙা হয় কূটনীতি ধর্মাবীর মেখে৷              ঈশ্বর ধর্মীয় অস্ত্রাগারে বন্দী৷ তাকেই মারব বলে লেখনীর অস্ত্রতে শান দি(ই)৷                          ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

বৃষ্টির রং লাল

টিপটিপ বৃষ্টির বারিষনামার বুকে নাম লেখা ছিল আমিনার৷               মাংসল টমেটোর রং ধুয়ে    বয়েছিল ধর্মিয় হিংসার নদী৷                            মেঘের হুঙ্কার পথে পথে৷           পশু থেকে ধার করে, বিবেকের  বিধর্মী প্রহারে...     ঈশ্বরীয় কান্না ঢেকে আসে৷ বৃষ্টির রং তবু লাল নয়৷ হয়তো বা ছিল,                      অন্ধকার কবেই বা রং চিনেছে? ওঁত পেতে ঝোপে বসা মশালের ঝাক          ভিজেছিল মাথা থেকে, আগুন নেভেনি৷ ক্ষণিক দূরেই এক ভালোবাসাঘর৷                 বর্ষার ছোঁয়াতে মুকুল ফুটেছে,                                  আদর মাখান কিছু বাকি৷ প্রেমিকার কাঁধ থেকে নেমে আসা প্রেমিকের ঠোট, হঠাৎ থমকে যায়৷          ফুরফুরে হাওয়া থেমে হিংসার লু ছুটে আসে৷ গণগর্জনে প্রেমিকা কেমন পাথর হয়ে যায়!!! পেট্রোলে পোড়ান দেহ যেন এক                                        গরম পিৎজার মতো৷ বৃষ্টিভেজা রাত জানে আধখাওয়া দগদগে ক্ষত৷ সেদিন বৃষ্টির নামে পরোয়ানা জারি হয়েছিল৷                      ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡

বারিষনামা

নিকানো ব্যাল্কনি ভরা শুকনো আবেগ                    ঝড়ের রাতের কোন কবর জাগায়৷ শরিকেরা ঘিরে ধরে এমন সময়৷                    স্মৃতিপটে সমুদ্রও বোবা হয়ে যায়৷               অলস বারিষনামা, ফেলে আসা চিঠি  আদতে রোদন করে সব কাজ ফেলে৷               কে কোন শহর পথে ভিজে চলে যাই  শেষের পাতায় শুধু কবিতাই মেলে৷ মাটির ভাপের গন্ধ দেশিয় সুগন্ধি, প্রিয় ফুল         ঘুমানো কফিন থেকে হঠাৎ বেরিয়ে... তোমার বুকের মাঝে একাকী মুহূর্তদের ভুল                ঘ্রাণের তুফানে ওড়ে সীমানা পেরিয়ে৷                      ✍ প্রভাত ঘোষ.⚡