Posts

কক্ষপথে

সীমানা ছাড়িয়ে অন্য কক্ষপথে প্রবেশ করায় পৃথিবীর ধার ঘেঁষে চলে গেল উত্তপ্ত তারাটি৷ পোড়া প্রকৃতির গন্ধ আমার সমাজ যেন উষ্ণতাকে গ্রহন করেনি৷ বাসের ভেতর বসে স্তন ছুঁয়ে চুমু খাওয়া যুগলের কাছে আমি এক নির্বাক পৃথিবী৷

বারিষনামা # ১২ (অপ্রকাশিত)

পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ভেতর ঘরে কে? মারবে বলে মেঘের ভেতর আগুন জ্বেলেছে৷ আলিঙ্গনের বারিষনামা বিরহীপ্রত্যয় আজ যে দিকে মেঘ জমে না, আমার বাড়ি নয়৷ চার কাঠা ঘর, ভীষণ গভীর, কাঁকড়াবিছের জাত পাঁজর খুলে মেঘ এনেছে বিরহসংঘাত৷ অন্নদায়ীর প্রলোভনে গঙ্গাপারের টান... উৎপাদনে ধ্বস নামালে মৃতেরই কল্যান৷ বিষের বুকে আলোকপাহাড়, সমূহ সংশয় গাছের নিচে উৎসবেরা মাদক প্রবণ নয়৷ কোন্ বাঁধনে আটকে যাবে স্বভাবি আহ্নিক? রাস্তা শেষে শুনবে ঘুরে বাঁচনসঙ্গীত৷ ওই পারে গাছ, বিশাল পাহাড়... খাদের পরে মৃত দাঁড়িয়ে থেকো, দূরের গানেও শান্তি অভিপ্রেত৷ যাবার আগেই ভূমির মতো নিরন্ত কর্ষনে ছিন্ন হলে নৃত্য হত পাখির স্পন্দনে৷ আয়না শেষে নিজের মমি খাদ্যপিরামিডে.. বারিষনামায় মন ভিজিও বিরহ আঙ্গিকে৷

বারিষনামা # ১১

চিত্তদাহে ভেজা যন্ত্রণায় মেঘের দরবারে বিচার চায় বারিষ দিন অনুরাগীর ঘরে অতৃপ্তের বুলেটি ঝড়, গান জগজিতের দোসরহীন৷ পুরোনো অধ্যায়ে ভীষণ স্রোত প্রেম, আরেক নাম কান্না, হোক আবেগ ব্যায় মেহগনির তলে প্রণয়প্রাণ বিরহে ঝরেনা যে.. মৃতের নাম সমীক্ষায়৷ মালগাড়ির ধ্বনি স্মৃতির তট জানালা রড থেকে ফেরত পথ শৈশবের মল্হারের টানে বারিষহাত উঠোনি শিল্পীর মনস্তাপ অভিসারের বৃষ্টির চে' বড় গামছা কই? যন্ত্রণার ভীড়ে রবির বই সামুদ্রিক ঘরের কোণ ঘিরে উৎসেচক অতীত ছুঁড়ে দেবে নতুন পথ প্রাসঙ্গিক৷

বোধি

এমনই সংগ্রাম, এই শেষ এই শুরু তলিয়ে যাবার বড় ক্ষীণ প্রবনতা উৎসর্গে জড়তা৷ মোমের পাথর ভেবে দ্যুতিতে জুড়াবে.. তপস্যাজীবন শেষে আমরন পৃথিবী পোড়াবে৷ রাজার বালিশে শুয়ে রাজা ভাবো                                   রাজাকে ভাবোনা? ঘুমেরও ভেতর বহু তৃষ্ণার যন্ত্রণা৷ দিয়েছে যে দেবার আশায় তার চিতাভষ্ম মেখে শান্তি যদি পাও নিজেকে পোড়াও, ওড়াও দ্যুতির ভার সন্যাসের গাঁয়ে গৃহ ছেড়ে কর গৃহদান৷ নতুবা হীরে ও দ্যুতি বোধ ছাড়া দুজনে সমান৷

ক্ষয়

লেখাহীন দিনগুলি গলায় তৃষ্ণার কাঠ, শুকিয়েছে শ্মশানের পথে৷ হঠাৎ বসন্ত শেষ, গ্রীষ্মেরও বিশ্রামাগার নেই৷ এমন সময় টুকরো টুকরো কিছু মেঘ এসে দাড়িয়েছে দূরে৷ আকুতির ভাষায় বোঝালো যেন তাদের প্রেমিকগুলি ফুটন্ত ক্ষুধার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে৷ সবে মাত্র রক্তাক্ত রাস্তার বুকে কয়েক ফোঁটাই শান্তিজল ছেঁটালাম, তখনি পেছন থেকে তাড়া দেয় জ্বালাও.. জ্বালাও.. হে ক্ষুধা ক্ষমার চোখে দেখ, প্রেমের বিক্রয় মূল্য ধার্য করব এমন বাজারু হতে এখনো পারিনি৷ ও পথে যাবনা বলে ত্যাগ করি চাকা, নদীর বুকের মতো প্রেমিকারা এতটা আদর দেয় সঙ্গমের আগে... প্রার্থনা করেছি, সে প্রেম আমায় যেন মৃত্যুদণ্ড দেয়৷ নির্বান কেমন হবে.. লঞ্চের কোণায় বসে বারিষের ঢেউ এসে শিখিয়ে দিয়েছে৷ কানে কানে বলে গেল বিরহ মৃত্যুর চে'ও ভারি৷ ক্ষয়হীন শিলান্যাস কখনো কি ভূমিকে উর্বর করতে পারে? যে ক্ষয় সূর্যের মতো সহনশীলতা রাখে তার কাছে অমৃতও ভিখারি৷ নকশা থেকে বেরিয়ে বুঝেছি, এই প্রেম, ভালবাসা দূরত্বেরই দান৷ সুপ্ত বীজ জেগে ওঠে বহু বহুকাল পরে পৃথিবীকে শান্তি দেবে বলে৷

পিতামহকাল

পিতামহকাল থেকে কাঁচের দূরত্বে থেমেছে সময় যেন গতি কেড়ে নিয়ে গেছে কেউ মুহুর্তের দুশ্চিন্তার দেশে৷ প্রতিটি সকাল সেই দেশে একদিন জন্ম পায়৷ বর্ডারে যতটা ভয়.. তার কোন ছায়া নেই সৈনিকের চোখে৷ নিষ্প্রভ আলোকে বর্মের আড়াল থেকে সে দেশেও হৃদকণ্ঠী ফুল ঘোরে ফেরে সুরভি সীমায়৷ গরল সবুজ হতে তার কাছে যায়৷ ছুঁড়ে ফেলা যন্ত্রণার ভার সজত্নে কুড়িয়ে রাখা কোকিলের স্বর স্পর্শ করে পিতামহকাল সম্পর্কের শরিক বাড়ায়৷ ওই ডাকে থেমে যাওয়া মৃত্যুরথগুলি ঘুরে যায় শান্তির ব্রুণেই প্রলয়ের কান্না যদি যুগে যুগে আসে... কোকিলের পুনর্জন্ম নেই?

ঋণ

অসময়ি বৃষ্টি ফোঁটা বইয়ের পাতায় শুন্যতায় লুপ্ত অভিমানী জাগাও, জাগাও তাকে মৃতগঙ্গা পাড়ে কলুষে আগুন জ্বালো ঘুমপাড়ানির৷ কোকিলের আত্মা উড়ে বিনয়ে বিলীন.. কর্কশের মূল্য ধার্য করি৷ হে বাতাস ঋণী রেখো, দয়িতার বেশে সুদ নিতে এসো প্রতিদিন৷ শিশির ও কুয়াশার মাঝামাঝি এসে শিথিল রোদের ঢেউয়ে স্নান৷ সেসব ঋণের শোধ সবুজ পুড়িয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সূর্য অগ্নিকুণ্ড নিয়ে ফেরো ঘর৷ পাখিদের ডানা পুড়ে নিভে আসে রবীন্দ্রপ্রহর৷ কোন দিক, কতদিন... পথ ভুলে গেছে আষাড়-শ্রাবণ দালান ও রাজপথে যন্ত্রাংশের খুলি কোন মন্ত্রে বেঁচে যাবে অর্ধমৃত প্রজাপতিগুলি?

নির্বীজ

যে পথে ঈশ্বর আসে সেই পথে কোদাল চালাও৷ ভাঙো..       ভাঙো..            ভেঙে ফেল,                       নক্ষত্র সরাও৷ ফুলে ফুলে চতুর্দিক দৃষ্টিহীন৷            সংগ্রাম                     ফ্যাকাশে.. যাদের ঈশ্বর মানো তারও বুকে লাল জমে আছে৷

সমাস

তফাত বুঝিয়ে দিলে উত্তরের তুমুল প্রণয়৷ পা যুগল ডুবে আছে সাহারার থেকে বহু দূর যতটা অনুশীলন, তার নিচে প্রত্যাখ্যান, ভয়৷ শিথিল গাড়ির চাকা খুলে আসে সাম্যের আধারে৷ তুমি ও আমার মাঝে                         সাধনা ও সংগ্রামের ফাঁক৷ বিভ্রমের আগে জলের সমতা যদি মুছে দিত মধ্যবিত্ত ত্রাস৷ অনুরাগ ভিজে গেলে মৃত তারাটির বুকে উড়ে যেত ঝিনুক, বিশ্বাস৷ পরিধীর সীমিত বিস্তারে.. মৃত্যুকে আঘাত করে শ্রাবণের বৃষ্টির খাতায় নাম লিখে বেঁচে থাকা যায়৷ জঞ্জালের ভার ঝেড়ে গাঙ্গেয় প্লাবনে পরিত্রাণ, কালের যাত্রায়৷ কিছুটা পেরিয়ে এলে মেঘ সমীহ এগিয়ে চলে উত্তরের পথে তোমায় জানাতে বারিষের ফোঁটা যদি শিখে নিত প্রেমের সমাস অনুষঙ্গ, প্রিয়জন, বহু বহু... দূরে বসে                                   প্রার্থনার ঝিনুক, বিশ্বাস৷

অভিশাপ

অবকাশহীন এক নৈঃশব্দের দেশে অতিথি হারিয়ে গেছে, যাক শবের কপালে আর কতটুকু বৃষ্টির দরকার? বহুকাল সাহারার বুক শ্মশান পেরিয়ে এসে বারিষে ভেজেনি৷ ফুটপাথে ঘামের বিলাপ৷ প্রেমের ছিবড়ে থেকে ক্ষোভ ভীষণ বিদ্রুপ! কার প্রাণ, কত দামে কিনেছে সময় নিঃস্বার দুয়ার থেকে... প্রতিটি আঘাত যেন বোবাদের অভিশাপ বয়৷