Posts

শূন্য

মোহের প্ল্যাটফর্ম থেকে তুলে নাও আমাকে হে ভালবাসাগামী ট্রেন, অতীতের স্বপ্ন যেন শুধু চিত্রকলা রূপে দেখে যেতে পারি৷ অনুভূতি বদলে যায় এমনই ট্রানসফর্মারে যুক্ত কর মন৷ এ.সি ও ডি.সি'র মাঝে পড়ে থাক যত আকাঙ্খার দাগ, শুকনো পাতার মতো একদিন জড়ো করে ফেলে আসব দূর কোনো মাঠের প্রান্তরে৷ সুন্দর তবুও যাকে আবর্জনার মতো সরিয়ে ফেলি৷ মোহের বাঁধন ছাড়া আবেগ আসে না৷ বেমালুম ভুলে যাই কে যে কোন স্থান থেকে বেরিয়ে এসেছি৷ যে যত সক্ষম সে ততটাই শূন্য থেকে কাছে, তবু ত্যাজ্য জমির বুকেই জমা থাকে হীরকসাগর৷ যতই তলিয়ে গেছি দৃষ্টি থেকে দূরে, গহ্বরের ভেতর নিজের অস্থিচূর্ণ অলসতা ছেড়ে অস্থির সমরে অসীমের বাজনা শুনতে পায়৷ যেখানেই শেষ ভাবি, চতুর্দিকে নতুন দুয়ার, নানাবিধ রঙের আহ্বানে অকস্মাৎ চমকে উঠি... বাহ্...  উদ্দীপনা ডানা পেলে জন্মান্তর চিনে নিতে চায়৷ পান্থহীন পথে যেতে যেতে রথে জড়ো করি নিঃস্বতার জ্ঞান, বৃক্ষরাজ বাড়বে বলে ফেলে দেয় পুরানো সম্পদ৷ আমি আর কতটুকু পারি? ক্ষয়িত স্বপ্নের ডাক শূন্য থেকে উঠে আসে রোজ শূন্যতা পূর্ণের আশায়৷

পদক্ষেপ

বিশ্বের ভেতর বিশ্ব, তার মধ্যে তুমি - আমি সব তারও মধ্যে বিশ্ব আছে নিশ্চুপ অথবা কলরব বাইরে ভয়ঙ্কর ঝড়, শক্ত কাঁচে মারণ বিদ্যুৎ চোখে আসে, আমি যেন মৃতদেহে শঙ্কিত শহর৷ যে সিন্দুকে যতখানি প্রেম, ভয় তার দ্বিগুণ শাসায় অভিশপ্ত আঁধারে বাস্তব ভয়ে ভয়ে মুখোশ সরায়৷ কলমের ডগা থেকে মুছে যাওয়া বিশ্বাসের দ্বীপ জীবনের চেয়ে ছোট, তবু পথ রুখেছে মৃত্যুর৷ নিজেকেই গেঁথে নাও প্রেমনামে প্রত্যাশা পেরেকে ভালবাসা বেঁচে থাক প্রতিদিন ছোট পদক্ষেপে৷ খেয়ালি পতাকা যার হৃদে, বোধপুষ্প উপহারে দাও; উড়ন্ত ফ্যারাও যদি নেমে ঘরে ঘরে জ্বালায় প্রদীপ

নিমজ্জিত

মাঝরাতে ঘুম চোখে নেমে আসা দৈববাণী ঊষার আলোক৷ তার কোন প্রতিচ্ছবি পশ্চাতে দেখিনি৷ স্রোতস্বিনী তিস্তা নয়, জলঙ্গির শান্ত প্রতিরূপ নাভিগর্ভ পথে নাড়িতে প্রবেশ করে মল্লিকার সুরভি ছড়ায়৷ হৃদয় এমনই নীড় যুগল বলাকা যার অন্দরমহলে স্বপ্নাবিষ্ট অভিসারে যায়৷ শতাব্দীর শেষ ডাকও অস্ত্রহীন ফিরে যায় মগ্নতার ঘুম না ভাঙিয়ে৷ ভয় তবু মাঝে মাঝে চোখ খুলে দেখে নেয় বিশ্বাসের জ্যোতি... যেন তার নিষ্পলক দৃষ্টি এক স্বর্ণাভ হরিণ৷

পরিত্রাণ

নিকট দূরত্ব এক অদম্য চিৎকার যার কোনো পরিভাষা নেই বালুচরে তপ্ত গান ছিঁড়ে ফেলা সপ্তকের গিঁট বুদ্ধির গণিত শেষে শূন্যটুকু সার বিচ্ছিন্ন আঁচড় এসে মাঝে মাঝে কঠিন বানায়৷ তবুও স্বার্থের চেয়ে বড় হও অবশিষ্ট প্রেম ভিনদেশী দুর্ভিক্ষের পরিত্রাণে লিখে দিও নাম সমগ্র প্রণাম আর আশীষের হাতে মুক্ত হও, মুক্ত হও, সুপ্ত বিষবাষ্প গ্রাস করে৷ পূর্ণ হোক, পূর্ণ হোক নির্বাণের হাত ধরে বিশ্বময় ব্রহ্মের স্লোগান৷

উদ্গম

আর কেউ নেই, চারিদিক শুধু জল একে একে সব পাখিরাও বাসাগামী শেষ হতে হতে বেঁচে থাকে সম্বল নিজেরই ভেতরে শুয়ে থাকা শুভকামী৷ দূর থেকে আসা ছুঁড়ে দেওয়া অভিশাপে বজ্রের তেজ স্পর্শ করেনা ভাটা আয়না যেভাবে ঝলসে দিতেও জানে সবার সমুখে উঁচু করে নাও মাথা৷ নিরালায় ঝিরঝিরে বৃষ্টির ফোঁটা জানালায় যদি আগুনের মতো বেঁধে ভেতরে ভেতরে ছিঁড়ে যায় বাধ্যতা নতুন সূর্য নবসঙ্গমে মেশে৷ সঙ্গম শেষে জন্মালে দেবশিশু শৌর্য-আড়ালে রাখো রহস্যদাগ পতঙ্গেরাই ফুলেদের পিছু পিছু সুরভির তলে ধুয়ে যাক অভিশাপ৷

চিত্তপট

শক্তের চেয়েও শক্ত নত হয়ে থাকে আহরিত গুণ ব্যক্তিশুভ্রতাকে প্রকাশের নদী নিজ জল স্থির করে উপহারে প্রতিবিম্ব দেয় অস্থির প্রয়াণে যারা শুয়ে পড়ে মরণের আগে৷ প্রাকৃতিক রঙ-পুষ্প মানুষের বিধবা শাড়িতে লাগাও-- লাগাও আর মুছে ফেল অহং এর ভিত শেকড়ের বলিষ্ঠ তড়িৎ উৎকর্ষ ছড়িয়ে দাও আকাশ ক্যাম্বিসে বহুত্ব প্রাঙ্গণে যদি চিত্র আঁকে একাত্মের নিব

পিতৃস্নেহ

যে ভ্রমর খোঁজ নিতে আসে  তোমার ফুলের আর বিষাদের মুহূর্তগুলিতে তার গুঞ্জনেই পাও উত্থানের নতুন শহর৷ বাঁধা আছে প্রাণের সঞ্চার নিরাকার ভালবাসা খনি; হৃদয় তরণী থেকে ডাক আসে এসো, সমূহ বিরাগ থেকে খুঁড়ে আনে সম্মোহিনী গান সুলভ সে, নয় তবু সস্তার বিকার; উদার পাথেয়৷ সে'ই বর্ম; খানা-খন্দ, দুর্যোগের পথে হাত ধরে থাকে পিতৃস্নেহ

দায়বদ্ধতা *

কোনো দায়বদ্ধতা নেই কবিতার কাছে৷ ভাত - কাপড়ের কোনো আশাও থাকে না৷ নিখাদ এক ঐশ্বরিক প্রেম, ভালবাসা যার কোনো কর্ড লাইন নেই৷ যা কিছু প্রশ্নের বাণ, যা কিছু উত্তরের খোঁজ জীবনের কাছে, সেটুকুই কবিতা দিয়েছে৷ কোনো এক অস্তগামী সময়ে দাঁড়িয়ে জাগতিক বন্ধু, প্রেম, সম্পকেরা গুটিয়ে নেবে জাল; সেদিনও নিজেকে পাব, ফেলে আসা সময়কে পাব, আগামী সূর্যের আলো কবিতাই চেনাবে আমাকে৷

বিচ্যুতি

একখণ্ড রাত্রি ধার দিতে পার অবসর থেকে? দিবলোকে হারিয়ে ফেলেছি নিজেরই অস্তিত্বের সূক্ষ্মতর রূপ অহরহ সুখস্নান, কর্তব্যের মোহ বাহু থেকে ছিটকে দিচ্ছে আঙুলের ভাঁজ নিজেই নিজের নই, কার কাছে যাব?

সফর

সন্ধিক্ষণ জাগ্রত হয়েছে, সুগন্ধি ধোঁয়ায় প্রিয় কাশফুল মহানন্দে শরীর দোলায়.. যেন তার জন্মদিনে প্রেমনদ গোধূলি সফরে মাঝবক্ষে ভাসতে ভাসতে প্রগাঢ় চুম্বন পাথুরে দ্বীপের বুকে সবুজাভ শীৎকার শোনায়৷