Posts

জার্নি

আশ্বিনের হঠাৎ বৃষ্টির পর রামধনু রঙের মতোই আমার আকাশ জুড়ে এলে, তারপর আর কোনো রং দেখতে পাই না কোথাও৷ প্রথম মৃত্যুর পরে উদ্বাস্তু আনন্দ কতো কতো পথ একা হাঁপিয়ে মরেছে...  যতটা আদর পেলে চিতা ছেড়ে উঠে বসে শব.. সে সব সোহাগি ছোঁয়া, ভালোবাসা বেপরোয়া লিখে রাখে বেহায়া সড়ক৷ এটুকুও ফাঁক নেই, বাতাস পেরিয়ে যাবে.. আলগা তুমি করোনি বাঁধন৷ তৃষ্ণার্ত পিঠের আশা পূর্ণ করে অতৃপ্ত স্তন৷ ছুঁয়ে যাওয়া মাথা, ভালোবাসাগাথা, আস্তে আস্তে ফিকে হওয়া রোদ.. শীতের বাতাসে কত শিহরণ জমে থাকে মন ভরে দেখে জি.টি রোড৷ অনর্গল খোশগল্প বহুকাল শোনে নি বাইক৷ এসো হে বিলম্ব প্রেম, ঢেলে দাও যত অনুভব.. স্বপ্নের ভেতর থেকে তুলে আনো রঙিন বাস্তব৷ ©প্রভাত ঘোষ

সৎকার

দাহ - সৎকার করে এলাম বিভিষিকা নামক এক সম্পর্কের অধ্যায়৷ অহরহ পোড়াতে পোড়াতে বিগত পৈশাচিক সময় চমৎকার বুঝিয়ে দিয়ে বলল.. যেখানে সততা নেই, সবার প্রথমে তাকে পূন্য আগুনের মাঝে সৎকার করে আসতে হয়৷  অমাবস্যার অধ্যায়ের শেষ পৃষ্ঠায় হস্তাক্ষর করতে গিয়ে মনে এল... উপন্যাস এখনও অনেকখানি বাকি৷ কতখানি নির্মমের আঘাত লুকিয়ে ছিল... এতদিনে মুখোশ সরালে৷ ক্ষমাহীন হইনি তবুও৷ সমাপ্তির অগ্নিকাণ্ড এখনো নেভেনি, কিছু অঙ্গারের জ্বালা নেভে না কখনো৷ আজীবন পুড়তে থাকে অপেক্ষায়, সময়ের দান দেখবে বলে৷  প্রেতাত্মা উন্মাদ হয়ে ঘুরে মরলেও তাকে হাত তুলে ভাত দেয়না কেউ'ই৷ আরও একটা মৃত্যু দেখতে চাই এ জীবনে৷ রক্তগলা দিন থেকে আস্তে আস্তে ক্ষয় হওয়া জীবাষ্মের শেষ দিন পর্যন্ত... এতটুকু বেঁচে থেকে নিজেকে নিভিয়ে ফেলা যেন এক মহাজাগতিক আহ্লাদের শেষ স্বপ্ন... সমস্ত জ্বালার ব্যথা, যন্ত্রণার ইতিকথা সেদিন শোনাবে, সেদিন জুড়াবে৷   তারপর কোনো অধ্যায়ের নব চরিত্রের মাঝখানে নিজেকে ছড়িয়ে ফেলব, নিজেকে মিশিয়ে নেব অন্য নতুন কোনো শরীরের ঘ্রাণে... কিছুটা ঘুমিয়ে নেব আমাকে বাঁচানো সেই নৌকাটির হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে৷ © প্রভাত ঘোষ

সঞ্জিবনী

এ ঘর ও ঘর করে খুঁজে গেছি এতদিন, ভ্রান্তির শিবিরে বসে আগুনের আঁচে কত যে বিনিদ্র রাত চিতা হয়ে জ্বলে গেছে হিসেব রাখিনি৷ এতগুলো বছরের নিটোল তপস্যা বুঝি পূর্ণ হল আজ! তোমাকে সন্তুর বলি অথবা সাগর থেকে ছুটে আসা হৃদয়ের ঢেউ, প্রতিটা জখম এসে ধুয়ে দাও, মুছে দাও পুরোনো অঙ্গার৷ ভালোবাসা সোহাগের প্রলেপ লাগালে বুঝি কঙ্কালের বুক থেকে বের হয়ে আসে দীপ্ত হীরে! তুমি তো হীরের চেয়ে কম নও প্রিয় ভালোবাসা৷ এ দেশে আঘাত এলে ওপারের আয়নায় ভেসে ওঠে যন্ত্রণার সুর৷ এমন জড়িয়ে ধরি না পাওয়ার ঘরে, ঘন অন্ধকারে.. না ধরে পারি না যে—  পূজার থালাকে আমি কী দিয়ে সাজাই? কী প্রসাদে ঈশ্বরীকে পাই?  প্রতি রাত শব্দ শোনে, স্বপ্ন দেখে, কানে আসে রাজকন্যার অশ্বারোহী ক্ষুর...  সংসার সাজাবো বলে ইন্দ্রের প্রাসাদ থেকে এনেছি সিঁদূর৷ ©প্রভাত ঘোষ

তোমাকেই চাই

তোমাকেই চাই.. শুধু তোমাকেই চাই... সমুদ্রের পাড়ে বসে বৃষ্টির সন্ধ্যায়.. তোমাকেই চাই, শুধু তোমাকেই চাই... নির্জন পাহাড় ঘেরা সবুজ জ্যোৎস্নায়... তোমাকেই চাই, শুধু তোমাকেই চাই... যে সময় সূর্য এসে জানাবে বিদায়.. তোমায় জড়িয়ে ধরে হেঁটে যাব গুটি গুটি পা'য়... গোধূলীর ঢেউ আর প্রেমের হাওয়ায়... তোমাকেই চাই, ওগো তোমাকেই চাই.... তোমাকেই চাই, শুধু তোমাকেই চাই.... ©প্রভাত ঘোষ

মৃত্যু

     এমন মৃত্যু দেখিনি কোনোদিন, শরতের শীত দিয়ে শুরু হয়ে বসন্তকে আরও রঙিন হতে দেখেছি... তবু এমন মৃত্যু দেখিনি যেখানে অমাবস্যা হত্যে দিয়ে বসে থাকে সংসারকে ছিঁড়ে খাবে বলে.. সত্যি বলছি, এমন মৃত্যু আর দেখিনি কখনো৷ টুকরো টুকরো নাভিমূল, ফুটো হওয়া হৃদয়কে একসাথে কবরে ও শ্মশানে দেখেছি৷      শুয়েছিল কলজে থেকে খসে পড়া ভালবাসার ভগ্নাবশেষ.. দেখে গেছি, ছিঁড়ে গেছি, নিংড়ে গেছি নিজের ভিতর৷ উহ টুকু করতে পারিনি... বন্ধ দরজার শেষে হাউহাউ কেঁদে গেছে স্বপ্ন ভেঙে অন্ধ হওয়া চোখ, কেউ তাকে চিনতে পারেনি৷      এমন মৃত্যু আর দেখিনি কখনো যাকে গোপনে পুড়িয়ে দিতে হয়.. সেই ঘর এখনো সাজানো আছে নির্লিপ্ত পাহাড়ের মতো৷ গোলাপি দেওয়াল, জানালায় ফুল ফুল পরদাগুলো বাতাসে পাখনা মেলে উড়ে এসে এখনো আদর করে... শুধু এক না পাওয়ার হাহাকার, হারাবার চিৎকার উন্মত্ত করে তোলে বারবার ভস্মভরা ঘরে৷      এখন এমন কেউ নেই... আলতো করে ছুঁয়ে দেবে ঠোঁটের শয্যায়, হঠাৎ জড়িয়ে নেবে নীল নীল আলো জ্বলা রাতে... এখন শুধুই রাত জেগে থাকে একা মনস্তাপে৷

ধ্বস

অনেক দেখেছি আর  দেখে যাচ্ছি— আমরাও তো হাতে পায়ে বাঁধা রক্ত ঝরতে ঝরতে কণ্ঠে মরে গেছে স্বর তোমার আজকে, কাল আমার বিপদ কী করব? কী করছি— করেই বা কী লাভ? জমক ফুরিয়ে গেলে ধ্বসে যায় পুরোনো সংবাদ লিখব না লিখব না করে  লিখে ফেলছি তা'ও কী লিখব! রাষ্ট্র তুমি কাদের বাঁচাও

সই

এসেছে বলেই আমি যেতে পারছি না গুপ্ত যত পথ সবই খোলা শুধু একটা মুখ মন বলা আড়ম্বর হবে তাকেই সাজাব বলে নিজের'ই নিজের কাছে দেনা কে আপন, কে না— আস্তে আস্তে ভেসে উঠছে সব না ছোঁয়া বাস্তব হেস্তনেস্ত হোক এইবার দেখি কে শুধুই আমার; কে সবার কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে মন কে'ই বা জেনে ফেলছে না বলা বারণ ওই যে, ওই যে, ওই— দু-হাতে সমুদ্র ধরে কাছে আসছে জন্মান্তর সই

অভিশাপ

ছুঁয়েছিলে, ছুঁয়েছিলে দূর থেকে হোক তবু কোনো নীরব মিছিলে— বিধাতার সব রং— সব'ই যেন এখন ধূসর এক একটা অভিশাপ দূর থেকে ভেঙে যায় ঘর৷ কার গলা— কোন স্বর— মনে নেই এখন কিছুই মুঠো মুঠো দীর্ঘশ্বাস জড়ো হলে পাশ ফিরে শুই

ফেরা

ছুটে ছুটে কত পথ, খানা-খন্দ, বিষাদযন্ত্রণা কোথায় যে হারিয়ে গিয়েছ... যত কিছু স্তব, স্তুতি তোমার'ই তো সব নিঠুর বাস্তব তোমাকে ফিরিয়ে নিল—  অকস্মাৎ, অগ্নির পরশে কোথাও জলধী কাঁদে বারিষের অপেক্ষায় বসে৷ হে বিশ্বাস ফিরে এসো ফিরে এসো— ফিরে এসো— দাড়িয়ে যেওনা মাঝ পথে তুমি ছাড়া নগন্যই এ জীবন, জীবনের ব্রতে৷ আরো একটু কাছে এসো, ছুঁয়ে দেখো... স্বভাবের আমিও তো দোষি— সবটুকু দেব বলে  সমস্তই হারাতে এসেছি

গণ্ডি

আগুনের ভয় আর বিশ্বাসের কোপে ছুটে যাচ্ছি, মরে যাচ্ছি, বিনাশের মতো বিতৃষ্ণার লাশ ঘুরছে হাসির মোড়কে তুমি সেই ভরসা যা হয়নি বিরত যত শিক্ষা যন্ত্রণার ভারে পূর্ণ হতে ঠেলে দেয় আমাদের পরীক্ষার তীরে তোমার'ই আদর্শ যাকে পারিনি হারাতে চূর্ণ হয়ে আজও আমি পা ধুচ্ছি হীরের হে ঈশ্বর, আরও আরও শক্ত করো আরও এত শক্ত, এত শক্ত... না ভাঙি আঘাতে বোধ নিজে গণ্ডি ভাঙছে, ভেঙেছে বিকার'ও জীবনে দাদুর পায়ে প্রণাম জানাতে