Prabhat poem (বাংলা কবিতা - প্রভাত ঘোষ)

অনেক দেখেছি আর  দেখে যাচ্ছি— আমরাও তো হাতে পায়ে বাঁধা রক্ত ঝরতে ঝরতে কণ্ঠে মরে গেছে স্বর তোমার আজকে, কাল আমার বিপদ কী করব? কী করছি— করেই বা কী লাভ? জমক ফুরিয়ে গেলে ধ্বসে যায় পুরোনো সংবাদ লিখব না লিখব না করে  লিখে ফেলছি তা'ও কী লিখব! রাষ্ট্র তুমি কাদের বাঁচাও

এসেছে বলেই আমি যেতে পারছি না গুপ্ত যত পথ সবই খোলা শুধু একটা মুখ মন বলা আড়ম্বর হবে তাকেই সাজাব বলে নিজের'ই নিজের কাছে দেনা কে আপন, কে না— আস্তে আস্তে ভেসে উঠছে সব না ছোঁয়া বাস্তব হেস্তনেস্ত হোক এইবার দেখি কে শুধুই আমার; কে সবার কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে মন কে'ই বা জেনে ফেলছে না বলা বারণ ওই যে, ওই যে, ওই— দু-হাতে সমুদ্র ধরে কাছে আসছে জন্মান্তর সই

ছুঁয়েছিলে, ছুঁয়েছিলে দূর থেকে হোক তবু কোনো নীরব মিছিলে— বিধাতার সব রং— সব'ই যেন এখন ধূসর এক একটা অভিশাপ দূর থেকে ভেঙে যায় ঘর৷ কার গলা— কোন স্বর— মনে নেই এখন কিছুই মুঠো মুঠো দীর্ঘশ্বাস জড়ো হলে পাশ ফিরে শুই

ছুটে ছুটে কত পথ, খানা-খন্দ, বিষাদযন্ত্রণা কোথায় যে হারিয়ে গিয়েছ... যত কিছু স্তব, স্তুতি তোমার'ই তো সব নিঠুর বাস্তব তোমাকে ফিরিয়ে নিল—  অকস্মাৎ, অগ্নির পরশে কোথাও জলধী কাঁদে বারিষের অপেক্ষায় বসে৷ হে বিশ্বাস ফিরে এসো ফিরে এসো— ফিরে এসো— দাড়িয়ে যেওনা মাঝ পথে তুমি ছাড়া নগন্যই এ জীবন, জীবনের ব্রতে৷ আরো একটু কাছে এসো, ছুঁয়ে দেখো... স্বভাবের আমিও তো দোষি— সবটুকু দেব বলে  সমস্তই হারাতে এসেছি

আগুনের ভয় আর বিশ্বাসের কোপে ছুটে যাচ্ছি, মরে যাচ্ছি, বিনাশের মতো বিতৃষ্ণার লাশ ঘুরছে হাসির মোড়কে তুমি সেই ভরসা যা হয়নি বিরত যত শিক্ষা যন্ত্রণার ভারে পূর্ণ হতে ঠেলে দেয় আমাদের পরীক্ষার তীরে তোমার'ই আদর্শ যাকে পারিনি হারাতে চূর্ণ হয়ে আজও আমি পা ধুচ্ছি হীরের হে ঈশ্বর, আরও আরও শক্ত করো আরও এত শক্ত, এত শক্ত... না ভাঙি আঘাতে বোধ নিজে গণ্ডি ভাঙছে, ভেঙেছে বিকার'ও জীবনে দাদুর পায়ে প্রণাম জানাতে

সমস্ত ভিজিয়ে দাও                 ঠোঁটে ঠোঁটে ছিঁড়ে দাও জামা... সে সব আদুরে বকা আজও কোনো স্মৃতিঘরে জমা৷ এত কাছাকাছি আসা—  যেন কোনো             অান্তরিক প্রকৃতির ঢেউ তোমার মতন করে এত কাছে আসেওনি কেউ আমার মতন করে এত ভাল বাসেও না কেউ...

কেটে যাচ্ছি, হেটে যাচ্ছি দৌড়ে যাচ্ছি জালের অন্দরে হাঁপানি জড়িয়ে এলে কতদিন যুদ্ধ চলতে পারে? আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র পথ আর ঘর অস্ত্রকে ঢুকিয়ে রাখি বাণীর ভিতর যাত্রাটুকু পাওয়া, আর শত্রু বলতে শোক অভ্যাসের ঘরে থাকে জীবনের চরিত্র বাহক এই'ই ভাবছি, ছিঁড়ে যাচ্ছি, জুড়ে যাচ্ছি শক্ত করছি খোঁজ— নিজের'ই ভেতরে এক পিতাকেই জন্ম দিচ্ছি রোজ৷

ক্ষমা করো, ক্ষমা করো আমাকে হে কৌতুহলী মন গোপন দুয়ার থেকে তুলে আনে বিরহ কথন যে যার বাঁকের মত যায় নদীর ভিতরে নদী জল দিয়ে বালিকে লুকায় কতখানি অপরাধ জমা রাখে সাধাসিধে তূণ অবসাদ ঘিরে এলে সতের'ই জুন স্মৃতির ভেতর থেকে টেনে আনে পুরোনো আগুন৷

কিছু কি হারিয়ে গেছে? হেসে ফেলছে মূক ব্যথার নিষেক স্থিতি কেউ তো শুনুক আমাদের পাশাপাশি ঘর পাশাপাশি অচেনা শহর অভিভূত দৃষ্টির আড়ালে গূঢ় অন্তর্দহন ক্ষতচিহ্নে ক্রমাগত ভাবনার ঘায়ে ঘায়ে খাদ বিষাদের মৌনজালে মর্মবিদারণ মত্যুও এমনই এক নিবৃত্তির ফাঁদ জীবন ফস্কে যাওয়া শ্যাওলার মতো অবসাদ৷

বেঁচে আছ  বেঁচে আছি মশার ডিমের মতো চোখ ঘুমের আড়াল থেকে মানুষের মৃত্যু দেখা হোক৷ প্রাকৃত দুর্যোগ যেন আনকোরা প্রেমিকার গ্রীবা সামান্য লেহন করে যথেচ্ছ সম্ভোগ বেঁচে আছ  বেঁচে আছি? মশার ডিমের মতো চোখ