Posts

মেয়াদ

সহিষ্ণুতার পাথর  যখন ভাঙছে জলের নিচে সেদিন কাঁদলো রাত্রি প্রহর ঝরণা নামলো অতর্কিতে জলের ভীষণ রকম মেজাজ মনের নিজস্বতার তেজে আমায় ওড়ালো গন্ধরাজ বিশেষ ভালোবাসার ক্ষেতে কবে— নামতে চেয়ে ছিলাম ভীষন শূন্য ছিল যখন আদর ঝেঁটিয়ে দিল বিলাপ বুকের মাঝখানে মরিয়ম ক্ষণিক অন্ধকারের খেয়াল হঠাৎ ঝাঁপিয়ে এলে ঝোঁকে প্রেমের আকাশ সম মেয়াদ আবার ডাকছে অরণ্যকে © প্রভাত ঘোষ

চোখ

Image
যাওয়া শুধু যাওয়া নয়, ডানা হারানোর মত ক্ষোভ অসীম বিয়োগ ভেলাহীন মেঘ তুমি কিভাবে ভাসাও যত ছুঁই ততবার একটি নতুন চোখ দাও এমন'ই জগত যার প্রতি কোণে হৃদয়ের নিটোল তর্জমা তোমাকে জীবন ভেবে প্রতিবার অন্ধকারে  আঘাতকে করে গেছি ক্ষমা বারিষ যেদিন নামে  তারই মাঝে নৃত্য করে ঝেড়ে ফেলা নিশ্বাসের শোক মুছে যাওয়া হৃদয়কুহক যতই পুরোনো হও নতুন তোমার কাছে ম্লান কে যেন গোপন ঘরে ঝরণার শব্দ শোনান... © প্রভাত ঘোষ

ছাপ

এবার মরলে বেকার হব ভাতার নামে ভিক্ষা নেব বছর পাঁচেক চাকরি-বাজার লকডাউন রেশন হাতে ইঞ্জিনিয়ার এত টুকুই তার এক্তিয়ার মন্দাকালীন ভাতের ওপর অল্প নুন কলেজ শেষে ডিগ্রিধারি আন্দোলনের পাল্লা ভারি কণ্ঠ আবার হাতিয়ে নেবে কালশিটে চাষির ঘরে বউ মেলে না কাঁধের ওপর মস্ত দেনা চপের আকার আঁকবে বসে আর্কিটেক্ট যুদ্ধ পেটে ছাড়বে মাটি চাকরি সোনার পাথর বাটি বিপ্লবীদের হাজার কলম ফেসবুকে বাঁধিয়ে নেবে রাজনীতিতে বোমার ওপর শক্ত ফিতে ছাপ পড়েছে বিষাক্ত এক বস্তুতে © প্রভাত ঘোষ

যেতে যেতে

কোথাও কখনো যদি চলে যেতে চাই নীল ঘর, বারান্দা হলুদ হাড়ির ভেতরে শেষ বেঁচে থাকা দু-টুকরো খুদ যেতে যদি না দাও তখন তবু বলব শোন্ তবে শোন্  ওপাশের দীঘি বেয়ে রাত নেমে আসবে যখন পদ্মের দুলুনি এসে ঘাড় নেড়ে বলে যাবে— সে'ই ছিল এক অনাদায়ী ঋণ নিশীথ মসৃন— কখনো চাঁদের কাছে ধার নিত প্রেমের ঠিকানা কামিনীর গন্ধ শুঁকে চলে যেত জলের ভেতর সে এক সুরাহা ছিল সুরা ঢেলে দিত রাতে, মন তাকে ভেবে নিত ঘর৷ © প্রভাত ঘোষ

মিথ্যে হোক

যাবেন বলে তো বুকে আগলে রাখিনি ছাড়ছি না কোনো শব্দ, কোনো প্রেম, অলীক বিধান কেড়ে নিতে পারবে না— তাও আমার যে বহু ঋণ, এক কণা দিতেও পারিনি৷ কতটা মলিন হলে শোক লেখে রক্তস্নাত মন ঈশ্বরের মৃত্যু বরণ— কিভাবে বহন করে নিয়ে যাবে অস্তগামী ডানা এ কেমন কান্নার বাণী, কণ্ঠে কোনো বিদেহী আঘাত অথচ কেন যে আজ এ হেন শোকের মুখে ঝামা ঘষে দিতে পারছি না এটুকু সান্তনা ছিল সূর্যের কলমে আমার ঈশ্বর লিখে চলেছেন— কোথাও, কখনো  প্রণামের আশায় আশায় নিত্যদিন ফুল দিয়ে সাজিয়েছি রাতের সড়ক আজ শুধু এটুকু প্রার্থনা হে ঈশ্বর— মিথ্যে হোক, মৃত্যু মিথ্যে হোক © প্রভাত ঘোষ

ক্রয়-বিক্রয়

ঘর দেখে বিক্রি হয় শরীর বা হাত পেট বুঝে বিক্রি হয় কেউ চরম আঘাত, মুখে চরিত্র আড়াল, শুধু ঢং থাকে প্রত্যাবর্তনেও ক্রেতা আর বিক্রেতার গোপন বিহার অবাধে পোষাক খুলে  কেনা বেচা আখছার মন  মুখোশ চিনিয়ে দেয় নেমক হারাম আর পুষে রাখা বিষের ধরণ চারিদিকে বহু মুখ, মুখোশ আর নিত্য ব্যাভিচার কারও কোনো দায় নেই হত্যারও এমন'ই বিচার হাতুড়ি পিটিয়ে মারে মাঝে মাঝে, দাগহীন নিষ্ঠুর অন্তঃক্ষরণ কোন্ বৃষ্টি ধুয়ে ফেলবে এমনি পরিস্থিতি? এত জ্বলন্ত পোষাক তবে কার— কোথাও কি বিক্রি নেই স্মৃতি মুছে ফেলা ইরেজার! © প্রভাত ঘোষ

ঔদ্ধত্ত্বের শিখায়

হঠাৎ মৃত্যুর দিনে দুটো ফুল হাতে যারা আসেনি কখনো... ভয়ঙ্কর সুনামির পূর্বাভাস জানার পরেও যারা সাবধান করেনি সেদিন...  ছটফট করতে থাকা যন্ত্রণার দিনে যারা কথার মলমটুকু লাগাতে আসেনি... এ লেখা তাদের কাছে যাক৷ উড়ে গেল ঘর আর পুড়েছিল অন্ধের সংসার.. কে কতটা ভার তুলে নিতে এসেছিল সেই দিন? অথবা কিঞ্চিত দুটো পরিযায়ী মেঘ হয়ে সামান্য বৃষ্টির ছিঁটে দিয়েছিল নিদাঘ প্রান্তরে? যে ছিল সে আজও আছে পাশাপাশি হাত ধরে৷ তলিয়ে যেতাম, ঠিক সে সময় তুলে এনেছিল এক নারকীয় কূপ থেকে ফুলের বাগানে৷ প্রতিটি রাতের চোখে লেখা আছে তারই শুভনাম৷ ভালোবাসা বুকে নিয়ে তার'ই কথা লিখতে এলাম...                                                      — প্রভাত ঘোষ এই সূত্রে অদিতি সরকারের এই লেখাটি লিখতে বড় ইচ্ছে করল— "পুরুষের ভালোবাসা পাওয়াও সাধনার বিষয়। দেহদানের পরেই যে-নারী ব'লে পুরুষের ভালোবাসা পেয়েছি, সে নির্বোধ; পুরুষের বিশ্বাস ছুঁয়েই দেহ ছুঁতে হয়... শরীর তো বেশ্যাও দেয়।"

বসন্ত

Image
  'কখনো যাব না' বলে থেমে আজও থাকেনি উড়ান৷ বাতাসের সাথে শোঁ শোঁ করে এগোনোর যাত্রাপথ মলিন হয়নি কখনোই পশ্চাতে বারুদ আছে বলে৷       বেড়িয়ে এসেছ বুড়ি? বহুকাল না দেখায় অচেনা লেগেছে কোনো রং? এ মনের চোখ খুলে শ্বাসের দরজা ঠেলে বেলি ফুলে ডুবিয়েছ প্রাণ?         সহস্র অঘ্রাণ যেন তোমারই অপেক্ষায় আস্তে আস্তে বৃদ্ধ হয়ে গেল আর তুমি তাকে চেয়েও দেখলে না৷ চৈত্র শেষে কচি শাল - পলাশের ফুল প্রেমিকার মতো এসে চুলের কিনার ধরে গালে ঠেকে দিয়ে যায় চুম্বনের নতুন সমাস৷ সমস্ত জগত জুড়ে ভালোবাসা তোমারই তো বাস৷ আর আমি আজীবন সন্যাসে জড়াব বলে রূদ্রাক্ষের মালা নিয়ে বসি৷        অবুঝের চোখে কত রং এই বসন্ত দিয়েছে৷ শুনিয়েছে একতার গান, হে প্রেম, মহান৷ এতটা মহান যে— চরণের চিহ্নটুকু নেই তবু চারিদিক ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছ মানবের প্রতিটি কোণায়৷ যে যার যাত্রার পথ ভালবেসে নিজে খুঁজে নেয়৷             যতই এগিয়ে যাই গ্রাম থেকে গ্রামান্তর সুরভির টানে, যে পথ হাঁটিনি আমি আগে কোনো মিথ্যা অভিমানে৷ হৃদয়ের পথ চেনা যায় জড়তার নাগ পাশ সরিয়ে বেরোলে... এ জীবন জ্যান্ত হয় ফি-বছর বসন্তের কোলে৷ © প্রভাত ঘোষ

নিমেষ

যাচ্ছে নিমেষ সময় ভেঙে দেখছে না কি একটু থেমে— বুকের নরম ছটফটালো ভীষণ পরিত্যাগে মেঘের যদি হৃদয় ভাঙে কণ্ঠ দিয়ে কষ্ট নামে জানলা থেকে হাত ছুঁতে চায় ফেরার অসম্ভবে ভেতর ভেতর জড়িয়ে ধোরো বৃষ্টি নামার আগে মনের ভেতর টুকরো ডানা মরার আগে ঝাপটালো না! দোষ কী জলের যখন ঘরেই ঝড়ের আসা যাওয়া হঠাৎ চোখে প্রেম নামিয়ে অন্ধকারে ঠোঁট বাড়িয়ে রাতের হাওয়া ফের যদি আজ ছোঁয়ার কথা ভাবে আমায় ভেবে জড়িয়ে ধোরো বৃষ্টি নামার আগে © প্রভাত ঘোষ

প্রেম পিরামিড (২০)

হঠাৎ মৃত্যুর দিনে দুটো ফুল হাতে যারা আসেনি কখনো... ভয়ঙ্কর সুনামির পূর্বাভাস জানার পরেও যারা সাবধান করেনি সেদিন...  ছটফট করতে থাকা যন্ত্রণার দিনে যারা কথার মলমটুকু লাগাতে আসেনি... এ লেখা তাদের কাছে যাক৷ উড়ে গেল ঘর আর পুড়েছিল অন্ধের সংসার.. কে কতটা ভার তুলে নিতে এসেছিল সেই দিন? অথবা কিঞ্চিত দুটো পরিযায়ী মেঘ হয়ে সামান্য বৃষ্টির ছিঁটে দিয়েছিল নিদাঘ প্রান্তরে? যে ছিল সে আজও আছে পাশাপাশি হাত ধরে৷ তলিয়ে যেতাম, ঠিক সে সময় তুলে এনেছিল এক নারকীয় কূপ থেকে ফুলের বাগানে৷ প্রতিটি রাতের চোখে লেখা আছে তারই শুভনাম৷ ভালোবাসা বুকে নিয়ে তার'ই কথা লিখতে এলাম...                                                             — প্রভাত ঘোষ