Posts

শব্দতরী

কতোবার জন্ম নিলে আলো হয়ে ঠিকরে আসে জল যতটা বিদ্বেষ ধুলে হাততালি পাড়ে শব্দদল সেখানে তোমায় দেখি.... আশু ক্ষোভ, বাকিটা বিশ্বাস আর হাত ধরে ভেসে চলা তরী তোমাকে লিখবো বলে ধীরে ধীরে শব্দ জড়ো করি। ✍️ প্রভাত ঘোষ

ঝালর

একদিন গলির মোড়ে, জীবনের সব ঝালরে সারাদিন জ্বালিয়ে বাতি, কটা দিন জমজমাটি। গহীনের নীল সাগরে, উজাগর প্রেমের ঘরে হাতে নিয়ে নীল বাতিটি কে বসে আদর করে তার গায়ে হলুদ শাড়ি, শিয়রে স্বপ্ননারী মায়াবী পরশে আর... কে কদিন হাসলো নীড়ে... এসবের মাপকাঠি তে জীবনের বিচার করি। © প্রভাত ঘোষ

অবশিষ্ট জল

হাসিমুখে ছেড়ে আসা জোয়ারের জল পেছনে ছুটিনি বলে হয়তো বা টিকে গেছে বন্ধুবৃত্তে শতদল। ছুটে ছুটে অবশেষে ভারাক্রান্ত থেমে যাওয়া নীরব রাতের মত বোধি; চৌহদ্দি পেরোতে গেলে গরাদ দাড়িয়ে থাকে গোলাপ তুলতে গেলে ক্ষতি। ছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও, কিছুটা তফাৎ যাও সময়ও অনেক করে খুন। ব্যথাহীন! হাসিমুখ; ক্ষীণতর যোগাযোগে বেঁচে আছে শতদল এটুকুই অনেক শুকুন। জীবনের চক্রব্যুহে সমাধান বড়ই সরল— নদীকে আপন করে, দু দন্ড হেসে খেলে বিনয়ের সাথে তুমি ছেড়ে এসো অবশিষ্ট জল। © প্রভাত ঘোষ 

ঘুরতে ফিরতে

Image
আরো কিছুদিন, আরো কিছু পথ... ছেলেবেলা আর চেনা সৈকত মাঝে মাঝে আসে ফিরিয়ে নেবার দিন দিন বাড়ে, ছোট হয় পরিধী হঠাৎ এভাবে ছোট্ট বিরতি গুমোট জীবনে আলতো হাওয়ার ঋণ। © প্রভাত ঘোষ

রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে গিয়ে

দিশাহীন হাঁটতে হাঁটতে ঘুম থেকে জেগে ওঠে যারা, সেরকম অনেককেই দেখেছি গীতবিতানের বুকে মাথা রাখে দিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে৷ রবীন্দ্রনাথ এমন এক ভূগর্ভস্থ স্তর যাকে প্রতিদিন মানুষ তুলে আনে বিভিন্ন প্রদেশে, মনের রসদ পেতে নিজেকে ভেজায় তবু এ এমন গভীরতা যার কোনো শেষবিন্দু নেই৷ বাড়ির পাশের মাঠে গরু চরানো, রোদ্দুরের ঘামে ভেজা লোকটিকে দেখে মনে হয় ওখানেই রয়েছেন তিনি৷ হাড় সেঁকা রোদে সেই তালগাছকে দাড়িয়ে থাকতে দেখি আর ছায়াটিকে রবীন্দ্রনাথের মতো লাগে৷ ওপাড়ার অক্ষরহীন মাঝিদেরও দেখি রবীন্দ্রজয়ন্তি অনুষ্ঠানে কেমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এই বুড়ো ছবিটির দিকে৷ কে জানে কী বোঝে, তবু যেন কোনো এক পুরোনো নাড়ীর টান পা দুটিকে আঁকড়ে রয়েছে৷ মাঝে মাঝে সন্ধে হলে হেঁটে আসি দুপাশে মাঠের মাঝে সরু রাস্তা ধরে৷ শিরিষ ফুলের গন্ধে মাথার ওপরে চাঁদ নেমে আসতে চায় যেন কোনো গাছের মগডালে৷ বাতাস বাজিয়ে যায় কৃষ্ণচূড়া বীজের নূপুর৷ ছোট্ট সাঁওতাল মেয়েটি কানে গুঁজে নেয় সোনালুর ফুল যেন কোনো রবীন্দ্রনাথ এখনি তাকে দেখে লিখে ফেলবে কালজয়ী অমোঘ কবিতা৷ আমি আর কতটুকু জানি? জানতে কি পেরেছি তোমায়? ঠাকুর তোমায় আমি যতটুকু জানি, সামান্যই, তাও সঞ্চয়িতা

ভয়

তোমার হাতে কুঠার আছে, আগুন আছে, লাঠি — নুইয়ে দিলে মেঘের মাথা, শ্মশান ঘরে মাটি ছাই মাখিয়ে ভোল বদলে ঝড়ের হুঙ্কারে সে বড় জোর ভাঙতে পারে, ভাঙতে পারে ঘটির জলে স্নানের ছিটে , পুকুর ভরা জল ঋতুর ঘরে আষাঢ় এলে শ্মশান চঞ্চল জ্বলবে না খড়; শুকানো কাঠ আগুন টানে নিজে ভয় কাটবে, ভয় কাটবেই ঝড়ের মাঝে একটা রাত ভিজে ©প্রভাত ঘোষ

ফাল্গুনী অধ্যায়

যেমন স্বপ্নে রঙিন দেখা  জীবন গাছের মত একা ফুলের গন্ধ পেলে অনেক পাখিই আসে নিচে খসলে রঙের পাহাড় ক্লান্তি জোড়ের জলে ধোয়া বাতাস জীবন যোগায় বাঁচার বিশ্বাসে ছিল পায়ের কাছেই খরা চেনায় ভুল করেছি করাত ধার দিয়েছিলাম এড়িয়ে গেলেও হতো পাখি আমার মতই ডাকে একটু স্বাধীনতার ফাঁকে ফুলের মায়াও যেন জড়াতে উদ্যত আমার প্রতিটি ফাল্গুনে শাস্তি মুকুব করে খুনের পলাশ জানে নিজেই নিজের কাছে দায়ী আবার কলম চালাই ক্ষতে জীবন দেখেছি ফুরসতে দেখি রঙিন - কালো সবার অধ্যায়ই © প্রভাত ঘোষ 

কথা

ওপারের মৃত্যুপুরী, সামনে বসে বিচারক ; মুখোমুখী তুমি আর আমি। ততদিনে শুকিয়েছে সমস্ত ঘোলাটে পুকুর, হয়তো বা ফেলে আসা বছর পঞ্চাশের পর। গোনা হচ্ছে প্রতিটি দিনের হিসেব লেখা কুণ্ডলীর পুরোন  হালখাতা। মুখের স্মিত হাসিতে হয়তো গোপন হবে কিছু। কিছু দোল, কিছু গান, কিছু কালো অন্ধকার রাত তখনও স্মৃতির ভিড়ে হেঁটে আনবো বাজি ও বিজয়া।  ততদিনে পাল্টে যাবে পাশে থাকা বাড়িটির রং। কেউ হয়তো আগে কেউ পরে , অপেক্ষা সবার ঘরে টেনে আনবে ঘুমের সময়। নির্দিষ্ট সময় শেষে ক্ষয়। একবার , আরো একবার যদি এভাবেই মুখোমুখী আবার সেখানে দেখা হয়...  কারো মুখে সংকোচ, কারো চোখে অনিচ্ছার ভান। তবুও হয়তো কথা হবে বুকে রেখে ঠাকুরের বাণী... আরো এক চৌকাঠ ডিঙানো— "তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন" ©প্রভাত ঘোষ

কলঙ্কিত

চশমা দিয়ে আড়াল করে রাখো নিজের জরা দেখছে না, কেউ দেখছে না এই ভ্রমের বাটখারা চলতি হাওয়ার শব্দে ভাসে কলঙ্কিত গান কোরাসে আলিঙ্গনে ক্ষমা প্রভুর, থাপ্পড়ে মশকরা ৷

পক্ষপাত

ঠুনকো আওয়াজ ঝড়ের গলায়, ঘোড়লাগাম ছুটছে, বালি ছিটিয়ে ভাবে পক্ষীরাজ থামতে হতো ডঙ্কাওয়াজে, পেণ্ডুলাম দেখিয়ে দেবে শেষ সময়ের সিংহদ্বার ওই যে দূরে মাঠের শেষে খড়ের ঘর সেইখানে কে বীণ বাজালো মূর্ছণায় তলব তোমায় শিখিয়ে দেবে দ্বিপ্রহর কাঠের গলা শুকিয়ে এলে কষ্ট হয় কোনখানে শিরদাঁড়ার পয়েন্ট সব জেনেও গোপন পকেট সূঁচ ফোটালেই পক্ষাঘাত বাঁচিয়ে রাখার শর্তে শুধু দেখছে কেউ মেঘের মাথায় সূর্য এলেই বজ্রপাত হঠাৎ আলো তীব্র এলেই অবাক হয় অন্ধকারে ধুঁকতে থাকা চাষআবাদ খুড়ছে কবর অহংকারের শেষ সময় পথের কাছেই চিনতে এলাম পক্ষপাত৷ © প্রভাত ঘোষ