রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে গিয়ে
দিশাহীন হাঁটতে হাঁটতে ঘুম থেকে জেগে ওঠে যারা, সেরকম অনেককেই দেখেছি গীতবিতানের বুকে মাথা রাখে দিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে৷ রবীন্দ্রনাথ এমন এক ভূগর্ভস্থ স্তর যাকে প্রতিদিন মানুষ তুলে আনে বিভিন্ন প্রদেশে, মনের রসদ পেতে নিজেকে ভেজায় তবু এ এমন গভীরতা যার কোনো শেষবিন্দু নেই৷ বাড়ির পাশের মাঠে গরু চরানো, রোদ্দুরের ঘামে ভেজা লোকটিকে দেখে মনে হয় ওখানেই রয়েছেন তিনি৷ হাড় সেঁকা রোদে সেই তালগাছকে দাড়িয়ে থাকতে দেখি আর ছায়াটিকে রবীন্দ্রনাথের মতো লাগে৷ ওপাড়ার অক্ষরহীন মাঝিদেরও দেখি রবীন্দ্রজয়ন্তি অনুষ্ঠানে কেমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এই বুড়ো ছবিটির দিকে৷ কে জানে কী বোঝে, তবু যেন কোনো এক পুরোনো নাড়ীর টান পা দুটিকে আঁকড়ে রয়েছে৷ মাঝে মাঝে সন্ধে হলে হেঁটে আসি দুপাশে মাঠের মাঝে সরু রাস্তা ধরে৷ শিরিষ ফুলের গন্ধে মাথার ওপরে চাঁদ নেমে আসতে চায় যেন কোনো গাছের মগডালে৷ বাতাস বাজিয়ে যায় কৃষ্ণচূড়া বীজের নূপুর৷ ছোট্ট সাঁওতাল মেয়েটি কানে গুঁজে নেয় সোনালুর ফুল যেন কোনো রবীন্দ্রনাথ এখনি তাকে দেখে লিখে ফেলবে কালজয়ী অমোঘ কবিতা৷
আমি আর কতটুকু জানি? জানতে কি পেরেছি তোমায়? ঠাকুর তোমায় আমি যতটুকু জানি, সামান্যই, তাও সঞ্চয়িতা বা গীতবিতানের সব কথা যেন আমারই জীবন থেকে সরে যাওয়া মুহুর্তের পাহাড়, অথবা মনের মধ্যে বয়ে চলা চিন্তাধারা স্রোত... সেখানে তোমাকে খুঁজে পাই, একখানা ঢিল যেন ওই পারে যাবে বলে স্থির জলে সহসা লাফায়॥
©প্রভাত ঘোষ
Comments
Post a Comment
Your Valuable Response and Comment would Inspire to Write Better..